পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১৫৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বৌদ্ধসাধনা

কবিতা আছে; তাতে আছে একদিন সন্ধ্যার সময়ে নৌকায় ব’সে সৌন্দর্য্যতত্ত্বসম্বন্ধে একটি বই পড়তে পড়তে ক্লান্ত ও বিরক্ত হয়ে যাই বাতি নিবিয়ে দিলুম অমনি নৌকার সমস্ত জানলা দিয়ে জ্যোৎস্নার ধারা এসে আমার কক্ষ প্লাবিত করে দিলে। ঐ ছোট বাতি আমার টেবিলে জ্বল্‌ছিল বলে আকাশভরা জ্যোৎস্না ঘরে প্রবেশ করতেই পারে নি। বাহিরে যে এত অজস্র সৌন্দর্য্য ভূলোক দ্যুলোক আচ্ছন্ন করে অপেক্ষা করছিল তা আমি জানতেও পারি নি। অহং আমাদের সেই রকম জিনিষ; অত্যন্ত কাছের এই জিনিষটা আমাদের বোধশক্তিকে চারিদিক থেকে এমনি আচ্ছন্ন করে রেখেছে যে অনন্ত আকাশভরা অজস্র আনন্দ আমরা বোধ করিতেই পারি নাই। এই অহংটুকু যেদিন নির্ব্বাণ হবে অমনি অনির্ব্বচনীয় আনন্দ এক মুহূর্ত্তে আমাদের কাছে পরিপূর্ণরূপে প্রত্যক্ষ হবেন। সেই আনন্দই যে বুদ্ধের লক্ষ্য তা’ বোঝা যায় যখন দেখি তিনি লোকলোকান্তরের জীবের প্রতি মৈত্রীবিস্তার করতে বল্‌চেন। এই জগদ্ব্যাপী প্রেমকে সত্যরূপে লাভ করতে গেলে নিজের অহংকে নির্ব্বাপিত করতে হয়, এই শিক্ষা দিতেই বুদ্ধদেব অবতীর্ণ হইয়াছিলেন; নইলে মানুষ বিশুদ্ধ আত্মহত্যার তত্ত্বকথা শোনবার জন্য তাঁর চারদিকে ভিড় করে আস্‌ত না।

 মহাবগ্‌গে ষষ্ঠখণ্ডে লিচ্ছবি-সেনা-নায়ক নিগ্রন্থ সাধু সিংহের সহিত মহাপুরুষ বুদ্ধদেবের একটি আলোচনা বিস্তারিত বর্ণিত আছে। সেই প্রসঙ্গে বুদ্ধ তাঁহার সাধনার দুইদিকই সুস্পষ্টভাবে দেখাইয়া দিয়াছেন। অতি সংক্ষেপে তাহার সারমর্ম্ম এই—হে

১২৫