পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১৬৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বৌদ্ধ সাধকের নির্ব্বাণ

 সাধনায় সিদ্ধিলাভ করিয়া বৌদ্ধ সাধক যখন রাগদ্বেষশূন্য ও প্রশান্তচিত্ত হন তখন তাঁহার মনের অবস্থা কিরূপ হয়? বাসনার নাশ সংস্কারের নাশ অবিদ্যার নাশ হইবার পরে তিনি কি অবস্থায় জীবিত থাকিবেন? ধম্মপদে উক্ত হইয়াছে:—যাঁহার দেহে রাগদ্বেষাদি কিছুই নাই, যাঁহার চিত্ত শান্তিলাভ করিয়াছে, যিনি ধর্ম্ম সম্যক্‌রূপে উপলব্ধি করিয়াছেন সেই ভিক্ষুর অমানুষী রতি অর্থাৎ আনন্দ হয়।

 আমরা সাধারণ মানুষ যাহা কিছু করিয়া থাকি আত্মসুখ কামনাই তাহার মূলে বিদ্যমান রহিয়াছে। আমাদের সর্ব্ববিধ কর্ম্মচেষ্টা এই স্বার্থপরতা হইতেই উদ্ভূত হইয়া থাকে। সুতরাং আমরা যখন শুনি যে আমাদের ক্ষুদ্র “অহং” মিথ্যা, আমাদের স্বার্থপরতা মিথ্যা, সাংসারিকতা মিথ্যা তখন আমরা একান্ত সঙ্কুচিত হই। সঙ্কোচের কারণ এই যে আমাদের মনে এইরূপ একটি দৃঢ় প্রত্যয় বদ্ধমূল আছে যে আমাদের স্নেহপ্রীতি দয়া মায়া সমস্ত আনন্দরসের উৎস অহংবোধের অভ্যন্তরে নিহিত আছে। যদি আমার এই অহংবোধটির বিলোপ ঘটে তবে আর রহিল কি? কিন্তু যাঁহারা দিব্যদৃষ্টি লাভ করিয়া মানবপ্রকৃতির গূঢ় রহস্য প্রত্যক্ষ করিয়াছেন তাঁহারা অবিচলিত কণ্ঠে ঘোষণা করিয়া থাকেন যে মানবের ক্ষুদ্র অহংবোধের বিলোপ ঘটিলেই বিশ্বব্যাপী আনন্দ তাঁহার নিকটে অবারিত হয়।

 যে ব্যক্তি স্বার্থপর, অজ্ঞানতাপ্রযুক্ত “আমি” ও “আমার”

১৩৪