পাতা:বৃহদারণ্যকোপনিষদ্‌.pdf/২৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৫ e বৃহদারণ্যকোপনিষদ । থাকে ; এই জন্তই সেই দেহুমধ্যে প্রবিষ্ট প্রাণনাদি-ক্রিয়াবিশিষ্ট সেই আত্মাকে দর্শন করিতে পায় না । ১৩ ভাল, এখানে যখন দর্শনের কোন প্রসঙ্গই নাই, তখন তাহাকে দর্শন করে মা’ এই কথাটা ত অপ্রাপ্তপ্রতিষেধ হইল, অর্থাৎ যাহার প্রাপ্তি সম্ভাবনা ছিল না, তাহারই নিষেধ করা হইল ? না, ইহা দোষাবহ হয় না ; কেন না, স্বষ্টি-প্রভৃতিপ্রতিপাদক বাক্যগুলির প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয় হইতেছে—আত্মৈকত্ত্বজ্ঞান সমুংপাদন করা ; স্বতরাং আত্মদর্শন এখানে অপ্রাসঙ্গিক নহে ; এই জন্তই মন্ত্রেতে আছে—তিনি প্রত্যেক বস্তুতে প্রবিষ্ট হইয়া তত্তদ্বন্ধপে প্রকাশ পাইয়াছিলেন ; লোকের বুদ্ধিগম্য হইবার জন্তই ইহার সেই রূপটি অভিব্যক্ত হইয়াছে’ ইত্যাদি। কেন যে, প্রাণনাদি ক্রিয়াসহযোগে আত্মারই দর্শন হয়, তাহার কারণ প্রদর্শন করিতেছেন—যে হেতু, প্রাণনাদি ক্রিয়াবিশিষ্ট সেই আত্মা অকৃৎস্ন—সমস্ত নয়, সেই হেতুই অসম্যক্ৰবুদ্ধির বিষয় হইয়া থাকে প্রাণনাদিবিশিষ্ট আত্মা যে, অসম্পূর্ণ কেন, তাহাও বলিতেছেন—আত্মা কেবল প্রাণন অর্থাৎ শ্বাস-প্রশ্বাসাদি ক্রিয়া করে বলিয়াই প্রাণ-নামে অভিহিত হইয়া থাকে । [ বুঝিতে হুইবে যে, ] শুধু প্রাণধারণ কাৰ্য্যের কর্তা বলিয়াই অর্থাৎ আত্মা প্রাণন করে বলিয়াই প্রাণনামে অভিহিত হয়, কিন্তু অন্ত ক্রিয়ার কর্তৃত্বনিবন্ধন নহে । যেমন, যে ব্যক্তি ছেদন করে, তাহাকে ‘লাবক’ ( ছেদক ) বলে, আর যে লোক পাক করে, তাহাকে ‘পাচক’ বলে ; ইহাও তদ্রুপ । অতএব অপরাপর ক্রিয়ার কর্তৃরূপে আত্মার অনুভূতি হয় না বলিয়াই ঐরুপ আত্মা অকৃৎস্ন বা অসম্পূর্ণ। ১৪ সেইরূপ বদন-ক্রিয়া করে বলিয়া—বাক্যোচ্চারণ করে বলিয়া বাক্ ; দর্শন করে বলিয়া চক্ষু: ; চক্ষুঃ অর্থ দৰ্শনকারী—দ্রষ্টা ; ‘শৃঙ্কন’-শ্রবণ করে বলিয়া শ্ৰোত্র। “প্রাশন এব প্রাণঃ,” আর “বদন বাক্” এই দুই কথায় আস্থাতে ক্রিয়াশক্তির অভিব্যক্তি জ্ঞাপিত হইল। আর “পগুন চক্ষু,” ও “শৃণ্বনৃ শ্রোত্ৰং এই দুইটি কথায় জ্ঞানশক্তির আবির্ভাব প্রদর্শন করা হইল ; কেন না, নাম ও রূপ, এই দুইটাই জ্ঞানশক্তির বিষয় বা গ্রহণীর । শ্রবণেন্দ্রিয় ও চক্ষু হইতেছে— বিজ্ঞানোৎপাদনের উপায়, আর বিজ্ঞান হইতেছে নাম ও রূপের সাধন অর্থাৎ শ্রোত্র ও চক্ষুরিজিয়ের সাহায্যে প্রথমে অনুভবাত্মক জ্ঞান জন্মে, তাহার পর সেই বিজ্ঞানই আবার নাম ও রূপ, এই দুইটা বিষয় গ্রহণ করে। জগতে নাম ও রূপ ভিন্ন আর কিছু জ্ঞাতব্য পদার্থ নাই। সেই ছুইটী বিষয় অনুভব করিতে হইলে চক্ষুঃ ও কর্ণ ভিন্ন আর কোনও সাধন বা উপায় নাই ; কাজেই চক্ষুঃ ও কর্ণকে