পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

A) o বৃহৎ বঙ্গ তন্মধ্যে একটি শ্লোক-“অয়ি দীন-দয়ার্ক্স-নাথ হে মথুরানাথ কদাবিলোক্যসে। হৃদয়ং ত্বদালোক কাতরং দয়িত ভ্ৰাম্যাতি কিং করোম্যহম”-চৈতন্যের অতি প্ৰিয় ছিল ; তিনি বলিতেন, “এই শ্লোকচন্দ্র জগৎ আলোকিত করিতেছে, ঘষিতে ঘষিতে যেরূপ চন্দনের গন্ধ বাডে, এই শ্লোক পুনঃ পুনঃ আবৃত্তি ও আলোচনা করিলে ইহার উৎকর্ষ তেমনই উপলব্ধ হয়। বন্ধুগণমধ্যে শোভে কৌস্তুভ মণি ; রসিকাব্যমধ্যে এই শ্লোক গণি ।।” ( চৈ. চি. মধ্য, ৪র্থ পঃ।) এই শ্লোক পড়িতে পড়িতে তিনি কতবার অজ্ঞান হইয়া পড়িয়াছেন, এবং মূৰ্ছাভঙ্গের পর সাশ্রনেত্ৰে গদগদ কণ্ঠে শুধু “অয়ি দীন, অয়ি দীন” বলিতে বলিতে আর বলিতে পারেন। নাই, পুনবায় সংজ্ঞাহারা হইয়াছেন। নিত্যাননা বহু তীর্থ ভ্ৰমণেব পাব মাধবেন্দ্রের উদ্দাম ভক্তিদর্শনে বলিয়াছিলেন, “যত তীর্থ দৰ্শন করিয়াছি--তাহার সর্বপ্রধান এই মাধবেন্দ্ৰ-পুৱীসঙ্গমস্থান, তুমি সৰ্ব্বতীর্থের সাব, যেহেতু তোমার মধ্যে যেরূপ আর কোথাও এরূপ কৃষ্ণভক্তির বিকাশ দেখিতে পাই না। তীর্থগুলি পড়িয়া আছে-সিংহাসন শূন্য, কোথাও ঠাকুরকে পাইলাম না।” তখন নিত্যানন্দ শুনিলেন-কেহ বলিতেছেন, “তুমি গৌড়ে ফিরিয়া যাও, সেইখানে কৃষ্ণের দর্শন পাইবে, নবদ্বীপে তেঁাহাব লীলা দেখিবো।” এই বাণী কোন দুজ্ঞেয় অলক্ষ্য শক্তিতে তঁহাকে নিমাই পণ্ডিতের বাড়ীতে টানিয়া আনিল । মাধবেন্দ্ৰ পুরাই ভক্তিরাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা-ইহার উপাধি ছিল “ভক্তিচন্দ্ৰোদয়।” ইহার স্থাপিত গোপালের অদৃষ্ট নানারূপ বিপদজালে জড়িত। বাজনামক কোন ব্যক্তি এই বিগ্ৰহ গোবৰ্দ্ধনে স্থাপন কবিয়াছিলেন। মুসলমানেরা উহাকে ধ্বংস করিতে আসিয়াছে, এই সংবাদে ইহার মন্দিরের পববৰ্ত্তী এক মালিক ইহাকে মৃত্তিকার নীচে পুতিয়া পালাইয়া যান, তথা হইতে মাধবেন্দ্ৰ ইহাকে উদ্ধার করিয়া দুইজন বাঙ্গালী ব্ৰাহ্মণকে ইহার সেবায়েত নিযুক্ত করিয়া যান। সেখানে পুনরায় মুসলমানেরা হানা দেয়, তথায় একমাস কাল ইনি বিট্টলেশ্বরেব গৃহে বাস কবেন, তৎপরে বহু ভাগ্যবিপৰ্য্যয়ের পর ইনি এখন জয়পুরে প্রতিষ্ঠিত আছেন। মাধবেন্দ্ৰ পুরী মহাপ্রভুর জন্মেব কিছু পূৰ্ব্বে বা পরে श्ॉंक्रांऊ श्ब्, भर्म •8^^ शुठें श्ट्रेल >8”० খৃষ্টাব্দ পৰ্যন্ত ইনি জীবিত ছিলেন-ইহার শিষ্যগণের মধ্যে অদ্বৈতাচাৰ্য্য, নিত্যানন্দ, কেশবভারতী ও ঈশ্বর পুরী প্ৰধান। এই বৈষ্ণবচক্র শেষে চৈতন্যকে আশ্ৰয় করিয়াছিল। চৈতন্যের নামের সঙ্গে নিত্যানন্দের ন্যায়। আর একজনের নাম অবিচ্ছিন্নভাবে জড়িত, ইনি অদ্বৈতাচাৰ্য্য। ইনি শ্ৰীহট্টের অন্তর্গত লাউর নগরে ১৪৩৪ থষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। ইনি চৈতন্য হইতে ৫২ বৎসরের বড় ছিলেন । রাজা গণেশেৰ প্ৰধানমন্ত্রী নৃসিংহ নাড়িয়াল ইহার পূর্বপুরুষ ছিলেন। (যাহার মন্ত্রণাবলে শ্ৰীগণেশ রাজা, গৌড়ের বাৎসাহে মারি নিজে হৈল। রাজা-অদ্বৈতপ্ৰকাশ। ) লাউয়ের রাজা কৃষ্ণদাসের সভায় অদ্বৈতের পিতা কুবের। তর্কপঞ্চানন মন্ত্রী ছিলেন । উত্তরকালে এই কৃষ্ণদাস অদ্বৈতের নিকট বৈষ্ণব দীক্ষা লইয়া “বাল্যলীলাসুত্ৰ” নামক একখানি অদ্বৈতজীবন সংস্কৃত ভাষায় বচনা করেন । কথিত আছে। অদ্বৈত লোকেব নাস্তিকতা দেখিয়া অত্যন্ত ব্যথিত অস্তঃকরণে ভগবানের নিকট প্রার্থনা জানাইতেন, সেই প্রার্থনার ফলে চৈতন্তের আবির্ভাব হয়। শান্তিপুরের শান্ত্যাচাৰ্য্য নামক এক বিখ্যাত পণ্ডিতের