পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গৌরাঙ্গ ও তঁাহার পরিকরবর্গ ԳՀՏ) লালিত্য, চোখে বিশ্বপ্ৰেম-তিনি যে সকল কথা বলিলেন তাহাতে বাদশাহের মন স্নেহরসে আদ্র হইল, তেঁাহার দাড়ি বহিয়া চোখের জল পড়িতে লাগিল । কতকগুলি সামান্য সৰ্ত্তে আবদ্ধ হইয়া, রঘুনাথ গৃহে ফিরিয়া আসিলেন। কিন্তু এই যে কঠোর কাশ্মীর বেশ-ইহাতে রঘুনাথের নিতান্ত ছদ্মবেশ ছিল, ভিতরে ভিতরে তিনি অনাসক্ত যোগীর মত থাকিয়া চৈতন্তের উপদেশ অক্ষরে অক্ষরে প্রতিপালন করিতেছিলেন । এই সময়ে রঘুনাথ পানিহাটী গ্রামে আসিয়া নিত্যানন্দের সঙ্গে দেখা করেন । তিনমাসব্যাপী কীৰ্ত্তনানন্দে পানিহাটীর আকাশ নারদের বীণাভিনন্দিত বৈকুণ্ঠের ন্যায় হইয়া উঠিয়াছিল। রঘুনাথ বুঝিলেন-রাজপ্রাসাদ র্তাহার স্থান নহে, ইহাই তেঁাহার প্রকৃত নিকেতন । নিত্যানন্দ বলিলেন, “চোরা তোকে এবার ধরে ফেলেছি। তোকে দণ্ড দিব।” সংসারে সম্পূর্ণ অনাসক্ত হইয়াও আসক্তির ভান দেখাইতেছিলেন, এই মিথ্যাচরণের জন্য তিনি “চোরা” উপাধি পাইয়াছিলেন। যাহা হউক। রঘুনাথ দণ্ডগ্ৰহণ করিলেন। সেখানে লক্ষ লক্ষ লোকের জন্য মহোৎসবের ব্যবস্থা করিলেন, এই উপলক্ষে তঁাহার বহু ব্যয় হইয়াছিল। তৃপ্তির সহিত ভোজন ছাড়া প্ৰধান বৈষ্ণবেরা সকলেই যথাযোগ্য দক্ষিণ পাইয়াছিলেন,--নিত্যানন্দের জন্য সাত তোলা সোণা এবং একশত টাকা প্ৰণামীর ব্যবস্থা হইল। নিত্যানন্দ রাঘবপণ্ডিতের গৃহে ছিলেন, তিনি পাইলেন একশত টাকা প্ৰণামী ও দুইতোলা সোণা, ইহা ছাড়া লক্ষ লক্ষ বৈষ্ণবকে তিনি ২০২২ টাকা হইতে ২২ টাকা পৰ্য্যন্ত দিয়াছিলেন । এই উৎসবের নাম “দণ্ড-মহোৎসব ।” অদ্যাবধি প্ৰতি বৎসর জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল ত্ৰয়োদশী তিথিতে কলিকাতার সন্নিহিত পানিহাটী গ্রামে এই উৎসব হইয়া থাকে । এবার গৃহে ফিরিয়া রঘুনাথ পুনবায় ঔদাসীন্য দেখাইতে লাগিলেন, তিনি অন্তঃপুরে শোওয়া ছাড়িয়া দিলেন, তাহার আহার ও নিদ্রা একেবারে গেল। বহুসৈন্য-পরিবেষ্টিত হইয়া রাজপ্ৰাসাদে তিনি বন্দীর মত হইয়া রহিলেন । তঁহার মাতা একদিন গোবৰ্দ্ধনকে বলিয়াছিলেন, “ইহাকে একটা থামের সঙ্গে দড়ি দিয়া বাধিয়া রাখ, তবে পলাইতে পরিবে না।” গোবৰ্দ্ধন বলিলেন, “ইন্দ্ৰসম ঐশ্বৰ্য্য, স্ত্রী অপসরাসম, এসকল বঁাধিতে নারিল যার মন,- দড়ির বাধনে তারে বাধিব কেমনে ?” সতর্ক পাহারার চোখ এড়াইয়া কুলগুরু যদুনন্দন আচাৰ্য্যকে ফাকি দিয়া ১৯ বৎসর বয়সে রঘুনাথ গৃহ ত্যাগ করিলেন, তিনি একদিনে শুধু পায়ে ত্ৰিশ মাইল হাটিয়া রাত্রে একটা পরিত্যক্ত গরুর গোয়ালে কাটাইলেন। তারপবে যাত্রাভোগ হইয়া শারণে আসিলেন। পুরীতে আসিতে র্তাহার ১২ দিন লাগি যাছিল। তখন কাশী মিত্রের বাড়ীতে চৈতন্য ছিলেন। মুকুন্দ দত্ত অঙ্গুলিদ্বারা রঘুনাথকে দেখাইয়া মহাপ্ৰভুকে বলিলেন, “ঐ দেখুন, আমাদের রঘু సాక్ష আছে, আহা ! কত কৃশ ও দুর্বল হইয়া গিয়াছে।” চৈতন্য স্বরূপদামোদরের উপর রক্ত থর শিক্ষার ভার দিলেন। র্তাহাব পিতা ও খুল্লতাত দশজন অশ্বারোহী সৈন্য ও অন্যা- ‘লাকজন পাঠাইয়া শিবানন্দ সেনের নিকট সন্ধান লইয়া গিয়াছিলেন। তখনও নিষ্ঠুনন্দের সঙ্গে রঘুনাথেব সাক্ষাৎ হয় নাই। অবশেষে দুঃখিত অন্তঃকরণে পুরীৰুে ছেন জানিয়া দুর্ভাগ্য বালকের হাত-খরচের জন্য র্তাহারা সামান্য ৪০০২ 盏 s