পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ8օ বৃহৎ বঙ্গ যাইবার ইঙ্গিত-বাণী। কিনা জানি না। কিন্তু, "আমাদেব মনে হয়, জয়ানন্দ তাহার চৈতন্য-মঙ্গলে মহাপ্ৰভুর তিরোধানের যে কাহিনী দিয়াছেন, তাহাই এতৎসম্বন্ধে সৰ্ব্বাপেক্ষা প্ৰাচীন ও যুক্তিসঙ্গত কথা। বর্থযাত্রাব সময়ে কীৰ্ত্তনানন্দে চৈতন্য উছাট খাইয পড়িয়া যান এবং তাহাতে পায়ে ভযানক চোট লাগে । অনতিকাল-পরে গুণ্ডিচা গৃহে র্তাহাকে আনা হয়, এবং তথায় তাহাৰ্ব্ব প্ৰবল জর হয । জখানন্দ বলেন, আষাঢ় মাসের ববিবার সপ্তমী তিথিতে ( ১৫৩৩ খৃঃ) বোলা তিনটার সমযে তিনি স্বৰ্গধামে গমন করেন, কিন্তু লোচনদাস বলেন রাত্রি আটটায় তাহাব বিযোগ হয় । সেদিন অপরাপর দিনেৰ ন্যান্য বেলা তিনটার পর গুণ্ডিচ বাটীর দরজা খোলা হয় নাই । চৈতন্তেব্য পাশ্বচৰগণ মন্দিবের দ্বাবে ভিড় কবিয়া ছিলেন। কিন্তু আটটা রাত্ৰিতে দরজা খুলিযা পাণ্ডারা বলেন—মহাপ্ৰভু স্বৰ্গে গমন করিয়াছেন, তাহার দেহের আর কোন চিহ্ন নাই । বেলা তিনটা হইতে রাত্ৰি আটিটা পৰ্যন্ত সেই গৃহে পাণ্ডার খিল লাগাইয়া কি কবিয়াছিলেন ? পূৰ্ব্বোক্ত দুই পুস্তকের কথা এবং ঈশান নাগরের অদ্বৈত-প্ৰকাশের কয়েকটি ছত্র হইতে আমাদের অনুমান হয়, বেলা ৩টাব সময়ে তাহার দেহত্যাগ হইলে মন্দিরের মধ্যেই দেববিগ্রহের প্রকোষ্ঠ-সংলগ্ন বৃহৎ মণ্ডপের এককোণে র্তাহাকে সমাধি দেওয়া হয। প্ৰতাপবিদ্রেব অনুমতি লইযই সম্ভবতঃ ঐ রূপ কব হইয়াছিল, যেহেতু উক্ত পুস্তকের একখানিতে লিখিত হইয়াছে, বহু পুষ্পমাল্য সেই মন্দিরের গুপ্তদ্ধাব দিয়া তখন লইয়া যাওয়া হইয়াছিল । বেলা তিনটা হইতে রাত্রি আটটা পৰ্য্যন্ত তাহার সমাধিকাৰ্য্যে ব্যয়িত হয়, তৎপরে সেই মণ্ডপের পাথরগুলি যথাস্থানে সন্নিবেশিত করিয়া সমাধিৰ চিহ্ন বিলুপ্ত করা হইয়াছিল। যাহারা সঠিক অবস্থা জানিয়াছিলেন-ওঁহিরা তিরোধান বেলা ৩টায় হইয়াছিল এরূপ লিখিয়াছিলেন ; কিন্তু আটটা রাত্রে সংবাদ রাষ্ট্র হয় যে তিনি আয় হলোকে নাই। সেই মণ্ডপের দেবপ্ৰকোষ্ঠের একটি নিকটস্থ কোণে গৌরাঙ্গের প্রস্তরনিৰ্ম্মি, পদচিহ্ন আছে। ঐ মন্দিরে চৈতন্যের সেই পদচিহ্ন থাকার কোন কারণ নাই ! জগনু’ , মন্দির ও গোপীনাথ মন্দির এই দুইটি চৈতন্যের প্রধান লীলা-স্থল। গুণ্ডিচা মন্দিরের সেই দিচিহ্ন কি লুক্কায়িত সমাধির নিদর্শন ? যাহা হউক। এ বিষয়ে আমি আর বেশী কথা লিখি, গ না । আমি আমার অনুমান মাত্র লিপিবদ্ধ করিলাম। র্যাহারা বিগ্রহের অঙ্গে তাহার চিন্ম, দেহ মিশিয়া যাইবার কথা বিশ্বাস করেন, তঁহাদের বিশ্বাসে অামি ‘ঘ’ দিতে ইচ্ছা! ক;ি • । পুরীর পাণ্ডাদের মধ্যে আর একটি ভীষণ প্ৰবাদ প্ৰচলিত আছে-তােহা আমি তথ্যস্ব শুনিয়াছি । জগন্নাথ বিগ্ৰহ হইতেও চৈতন্যের প্রতিপত্তি বেশী হওয়াতে পাণ্ডারা নাকি গ’পনে তঁহাকে হত্যা করিয়াছিল। কিন্তু রাজাধিরাজ প্রতাপরুদ্র যাহাকে সাক্ষাৎ ভগবান বািলয়া মান্য করিতেন, যাহার তিরোধানের পর রাজার ঘোর বিরাগ উপস্থিত হইয়াছিল, তাহারই ২ জধানীতে কি এরূপ একটা ঘটনা ঘটিতে পারে ? উড়িষ্যার রাজপঞ্জী সন্ধান করিলে হযত সত্যু ঘটনা ব্যক্ত হইতে পারে। চৈতম্ভের তিরোধান-সম্বন্ধে প্ৰসিদ্ধ গ্রন্থগুলি সকলেই নীরব। যে কয়েকখানি পুস্তকে একটু ইঙ্গিত আছে, তাহা বৈষ্ণব-সমাজের সর্বজনাদৃত গ্ৰন্থ নহে। শুধু লোচনদাস