পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓ6 e বৃহৎ বঙ্গ ন্যায়। আর কথা বলিতে পারিলেন না, ভাঙ্গা সুরে অল্প কথায় বলিলেন, “যদি ছাড়িবেন না, তবে আমাকে শিষ্য করুন ।”-যে যোগিবর পাছে মনে অহঙ্কারের উদয় হয় এজন্য কখনও শিষ্য গ্ৰহণ কবেন নাই, যিনি কৃষ্ণদাস কবিরাজকে তঁহার গ্রন্থের বহু উপকরণ দিয়া নিজেবে নাম উল্লেখ করিতে নিষেধ করিয়াছিলেন, যিনি চৈতন্যের বাল্যাসখা এবং তাঁহারই আদেশে বুকভরা ব্যথা লইয়া-চৈতন্যের শ্ৰীমুখদর্শনে চিরজীবন বঞ্চিত হইয়া-বৃন্দাবনেব এককোণে দুশ্চর প্ৰেমতপস্যায় নিযুক্ত ছিলেন, সেই বিষয়বিরাগী, কৃষ্ণে সমৰ্পিতজীবন প্রেমের সন্ন্যাসীর অটল সঙ্কল্প আজ টলিল। বিশাল বিটপিশাখা যেৰূপ বনলতাকে আশ্রম দেয়, তিনি সেই ভাবে নরোত্তমকে দীক্ষা দিয়া তঁাহাব নিকট রাখিলেন। ক্রমে বালকের পাণ্ডিত্য, অসীম ভক্তি ও পদগৌরব বৃন্দাবনে বিদিত হইল, জীব গোস্বামী শ্ৰীনিবাসেবী সঙ্গে তাহাবও শিক্ষার ভার লইলেন । তৃতীয় ব্যক্তিব নাম শ্যামানন্দ । ইনি নিম্ন শ্রেণীতে জন্মগ্রহণ করিযাছিলেন, ইহার পিতা কৃষ্ণ মণ্ডল উড়িষ্যার দণ্ডকেশ্বব পবগনার ধারেন্দা বাহাদুরপুরবাসী ছিলেন। কিন্তু এই পরিবাব শেষে বঙ্গদেশে আসিয়া উপনিবিষ্ট হইয়াছিলেন । শুষ্ঠামানন্দেব নাম ছিল দুঃখী । অল্পবয়সেই ইহার বিরাগ উপস্থিত হইয়াছিল। ইনি কালনায আসিয়া গৌরীদাস পণ্ডিতেব চৈতন্যমন্দিরে কতকদিন বাস করিয়াছিলেন। এখানকাব পুরোহিত ঈদযচৈতন্য দযা করিয ইহাকে ভক্তিশাস্ত্ৰ শিক্ষা দিয়াছিলেন এবং ইহার দুঃখী নাম ঘুচাইয়া কৃষ্ণদাস নাম দিঘাছিলেন। কালনা হইতে ইনি যাত্ৰা কবিয়া ভারতের যাবৎ তীৰ্থস্থান দর্শন কবেন । “রসিক মঙ্গল” নামক পুস্তকে ইহার বিস্তৃত ভ্ৰমণবৃত্তান্ত দেওয়া আছে। ইংরেজেবা যাহাকে mystic বলেন, ভাবতের সাধু-সম্প্রদায়ের সকলেই সেই শ্রেণীভুক্ত । ইহাবা যে সকল রূপ বা দৃশ্য দর্শন করেন, তাহ সাধারণ লোকোবা চৰ্ম্মচক্ষে দেখিতে পায় না। নরোত্তম তাহাব মানস গৌৰাঙ্গেব রূপ দেখিযাছিলেন, শ্ৰীনিবাসও কত কি দেখিয়া সমাধির দশা প্ৰাপ্ত হইতেন, “কৰ্ণানন্দ” প্রভৃতি পুস্তকে তাহা বর্ণিত আছে । তিনি মূৰ্চিত অবস্থায় মৃতকল্প হইয়া থাকিতেন, আত্মীয় ও ভক্তগণ তাহাব জীবনের আশঙ্কা কবিয়া বিষন্ন হইতেন। মহাপ্রভুর তো কথাই নাহ, স্বপ্ন ও জাগরণেব মধ্যে ছিল তঁহার জীবন । সেই আশ্চৰ্য্য কবিত্বময় স্বপ্নগুলি সূক্ষ্ম অধ্যাত্মজগতেব দৃশ্যোব ন্যায—তাহ ধবা-ছোয়া যাইত না ! ক্যাথারিন অব সিয়েনা (১৩৪৭ খৃঃ জন্ম) ছয় বৎসব বন্যাসে এক গির্জা ঘরের উপবে খৃষ্টের মূৰ্ত্তি দেখিতেন, তাহাব জীবনই এই স্বপ্নঘোরে কাটিয়াছিল। জীবনে কতবার যে এই মূৰ্ত্তি দেখিয়া তিনি সংজ্ঞাহীন হইয়া অলৌকিক আনন্দ উপভোগ করিতেন তাহার ঠিকানা নাই । সেণ্ট টেরেসা (১০৯১-১১৪৩ খৃঃ) খৃষ্টমূৰ্ত্তি এতবাব দেখিয়াছেন যে তাহার পুনঃ পুনঃ প্রেমের আবেগে মনে হইয়াছে যে তিনি ও খৃষ্ট এক ৷ জয়দেবেব বাধাব সম্বন্ধে “মুহুরবলোকিত মগুনলীলা, মধুরিপুবহমিতি ভাবনশীল”, বিদ্যাপতির “অনুখন মাধব মাধব সোঙরিতে সুন্দরী ভেল মধাই” এবং ভাগবতেব গোপীদের “অনুক্ষণ কৃষ্ণকে স্মরণ করিয়া তাহারা নিজেই কৃষ্ণ এই ভাবিতে লাগিলেন” প্রভৃতি কাহিনীৰ সঙ্গে এই সকল ক্যাথলিক সাধুজীবনের অনুভূতির অনেকটা ঐক্য আছে। আণ্ডার হিলের “মিষ্টিসিজম’ পাঠ করিলে পাঠক 吻f{ta阿但