পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

alv8 বৃহৎ বঙ্গ মনঃকষ্টের সীমা-পরিসীমা রহিল না, কারণ একথাও জনরব হইয়াছিল যে তাহারা জগৎসিংহকে মারিয়া ফেলিয়াছে । কিন্তু মোগলদের বরাৎ ভাল। কতলু খাঁ কিছু দিন হইতে অসুস্থ ছিলেন, হঠাৎ ( ১৫৯০ খৃঃ) তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হন। তঁহার পুত্রেরা নাবালক ছিল, এবং সৈন্যদিগকে প্ৰবলপরাক্রান্ত মোগল সম্রাটের বিরুদ্ধে পবিচালিত করিতে পারেন, তাহদের মধ্যে এরূপ কোন নেতা ছিলেন না। পাঠানের ভয় পাইয়া জগৎসিংহকে মুক্তি দিল, মানসিংহকে বহু অর্থ ও ১৫০ শত হস্তী উপঢৌকন দিয়া সন্ধির প্রস্তাব করিল-উড়িষ্যা তাহদের থাকিবে কিন্তু তাহারা সম্রাটের অধীন হইয়া থাকিবে। উড়িষ্যায় আকবর বাদশাহের নামে মুদ্র অঙ্কিত হইবে, এতদ্ব্যতীত তাহারা মানসিংহকে পুরীর অধিকার ছাড়িয়া দিল। সন্ধির শেষোক্ত দফায় “বিষ্ণুপদাম্বুজে ভৃঙ্গ” মানসিংহ বিশেষ শ্ৰীত হইয়াছিলেন। আকবর এই সন্ধিতে বিশেষ সন্তুষ্ট না হইলেও তিনি ইহা মঞ্জুর করিয়াছিলেন। কিন্তু কিছুকাল যাইতে না যাইতে পাঠানদের প্রধান মন্ত্রী খাজে। ইসসার মৃত্যু হওয়াতে তাহদের স্বাভাবিক উচ্ছঙ্খলাবৃত্তি বৃদ্ধি পাইল। তাহারা পবিত্র জগন্নাথ কতলু খাঁ ও ওসমান। মন্দির অধিকার করিয়া লুণ্ঠন করিল। মানসিংহ পুনরায় রণক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইলেন । মোগলেরা একটা যুদ্ধের পরই পাঠানদিগকে বিধ্বস্ত করিল। এবারও তাহারা সন্ধির প্রস্তাব করিল, সন্ধিতে উড়িষ্যা পুনরায় মোগল-সাম্রাজ্যভুক্ত হইল। পাঠাননেতৃগণ কতক জায়গীর পাইলেন, কিন্তু উড়িষ্যার রাজস্ব মোগল সম্রাটের প্রাপ্য হইল ( ১৫৯২ খৃঃ), কিন্তু পরবৎসরই পাঠান জায়গীরদারগণ পুনরায় বিদ্রোহী হইয়া বঙ্গদেশে লুটপাট চালাইতে লাগিল। তাহার রাজার প্রধান বন্দর লুণ্ঠন করিল। পুনরায় মানসিংহ তাহাদিগকে নিরস্ত করিলেন । তাহারা অতিশয় দৈন্যের সহিত বশ্যতা স্বীকার করিল। রাজা তাহাদিগকে একেবারে নিরাশ করা অবিবেচনার কাজ মনে করিয়া জায়গীরগুলির অধিকার প্রতাপণ করিলেন । কিন্তু মানসিংহ বাঙ্গলা ছাড়িয়া চলিয়া যাওয়ার পর, কতলু খার পুত্র ওসমান বিদ্রোহী হইলেন। তিনি বাঙ্গলাদেশে লুটপাট আরম্ভ করিয়া দিলেন, মোহন সিংহ ও প্ৰতাপ সিংহ নামক মোগল পক্ষের সেনানায়কদ্বয় ঘোর যুদ্ধ করিয়া ওসমান খাঁর হস্তে ঘেণ্ডারক নামক স্থানে পরাস্ত হন। মোগলরাজ-ভাণ্ডারের প্রধান আয়ব্যয়ের হিসাবরক্ষক আব্দুল রাজককে পাঠানেরা বন্দী করিয়া লইয়া যায়। এই ঘটনায় বঙ্গদেশ কিছুকালের জন্য ওসমান খার অধিকারে আসে এবং পাঠান-শাসন পুনঃ প্ৰতিষ্ঠিত হয় (১৬০০ খৃঃ) । সুতরাং রাজা মানসিংহকে সম্রাটের আদেশে পুনরায় বঙ্গদেশে পাঠান-দলনকাৰ্য্যের ভার লইয়া আসিতে হয়। শ্ৰীপুর অত্তয় নামক স্থানে পাঠানের বিপুল ক্ষতির সহিত পরাভূত হয়। আব্দুল রাজ্জাককে তাহার লৌহশূঙ্খলে আবদ্ধ আজল রঙজকের মুক্তি । d. করিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে লইয়া আসিয়াছিল। তিনি যে হাতীর পিঠে ছিলেন, তথায় এক দুৰ্দান্ত ভীষণদর্শন পাঠান মুক্ত কৃপাণ-সহ তাহার রক্ষকের কাজ