পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓ8sb” বৃহৎ বঙ্গ কার্ভালো অতিশয় বীরত্ব প্ৰদৰ্শন করেন এবং আহত হন। তখন ( ১৬০৬ খৃঃ) মানসিংহ প্রতাপাদিত্যের সঙ্গে যুদ্ধে বিশেষরূপ ব্যস্ত ছিলেন। প্ৰতাপের সর্বনাশ সাধন করিয়া তিনি কেদার রায়ের বিরুদ্ধে সমস্ত সৈন্য লইয়া অভিযান করিলেন। প্রথমতঃ তরবারি ও শৃঙ্খল প্রেরিত হইল, দর্পিতভাবে কেদার রায় শৃঙ্খল ফিরাইয়া দিলেন এবং মানসিংহকে বিদ্রুপ করিয়া প্ৰত্যুত্তরে একটি সংস্কৃত শ্লোক পাঠাইলেন, তাহা তদবধি সংস্কৃত-সাহিত্যের উদ্ভট শ্লোকগুলির মধ্যে স্থান পাইয়াছে। “ভিনত্তি নিত্যং করিরাজকুম্ভং । বিভক্টি বেগং পাবনাতিরেকম। করোতি বাসং গিরিরাজশৃঙ্গে । তথাপি সিংহঃ পশুরেব নান্যঃ ৷” মানসিংহ বলশালী, ক্ষমতাপন্ন, রাজানুগ্রহে প্ৰতিষ্ঠাব শিখরদেশে স্থিত, তথাপি তিনি পশুতুল্য। এই বিদ্রুপে উত্তেজিত হইয়া মানসিংহ শ্ৰীপুব অববোধ করেন। কেদার রায় এই যুদ্ধে পরাজিত হইলে মানসিংহ সন্ধির প্রস্তাবে স্বীকৃত হন। কথিত আছে মানসিংহ কেদার রায়ের কন্যাকে বিবাহ করেন, এ সম্বন্ধে হিন্দুস্থানে অনেক প্ৰবাদ চলিত আছে, তাহার একটি এই—“যদি রাজা মানসিংহ জাউকি বেটি ম্যাগী। যদি রাজা কেদার দেন। কবী। আব মিলাপ হুবে। যদি নীজর করি।” (অম্বরের শিলাদেবীর পুরোহিতগণের বংশাবলী । ) কিন্তু এই সন্ধি স্থায়ী হইল না । কেদার রায়ের সঙ্গে মানসিংহের পুনরায় সংঘর্ষ উপস্থিত হইল। কথিত আছে নয় দিন পৰ্য্যন্ত ভীষণ যুদ্ধের পর কেদার রায় পরাস্ত ও নিহত হন । ५झे ye's per Elliot's History of India, Vol. vi., q's at 3:Nint: SSS পৃষ্ঠায় উল্লিখিত আছে। ( যোগেন্দ্ৰবাবুর বিক্রমপুরের ইতিহাসের ১০১ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য । ) কথিত আছে কেদার রায় তাহার ৫০০ রণতরী লইয়া এই যুদ্ধে প্ৰস্তুত হইয়াছিলেন এবং মোগল সেনাপতি কিলমককে বন্দী করিয়াছিলেন। কিন্তু পরিণামে মোগলেরই জয় হইয়াছিল। কিন্তু জনপ্ৰবাদ অন্যরূপ । ইশা খাঁ যে কেদার রায়েব ভগিনী সোণামণিকে অপহরণ করিয়া লইয়া যাইয়া বিবাহ করেন, তৎসম্বন্ধে কোন সন্দেহ নাই ; এতৎসম্বন্ধে বিক্রমপুর্বোেব ইতিহাস (যোগেন্দ্ৰবাবুকৃত) এবং অপরাপর ঐতিহাসিক গ্রস্তে যে বিবরণ দেওয়া আছে, তাহাতে জানা যায় ইশা খাঁ ও চাদ-কেদার ভ্রাতৃদ্বয়ের মধ্যে এক সময়ে খুব সৌহার্দ্য ছিল। ইশা খাঁ এক সময়ে শ্ৰীপুর রাজধানীতে আতিথ্য স্বীকার করিয়া স্নানার্থিনী সোণামণির অপূর্ব রূপ দেখিয়া ধেরূপে পারেন। তঁহাকে লাভ করিবেন। এইজন্য কৃতসংকল্প হন। রায় রাজাদের এক অসন্তুষ্ট কৰ্ম্মচারী শ্ৰীমন্ত খাঁর সাহায্যে তিনি কতকদিন পরে তাহার ইচ্ছা পূর্ণ করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন । এই অপমানে ও লজ্জায় চাদ রায় যে দুঃসহ পরিতাপ পাইলেনতাহাতে পীড়িত হইয় পড়েন এবং তাঁহাতেই তঁহার মৃত্যু হয়। কেদার রায় প্রতিশোধার্থ পদ্মার অপর পারে থাকিয়া ইশা খাঁর অন্যতম রাজধানী খিজিরপুর লুণ্ঠন ও ধ্বংস করেন, তাহা ছাড়া কৈলাগাছা দুর্গ ভূমিসাৎ করেন। কিন্তু “ইশা খা” শীর্ষক যে পল্লীগাথা বহুদিন যাবৎ ময়মনসিংহ প্ৰভৃতি অঞ্চলে মুসলমান কবিকর্তৃক রচিত হইয়া মুসলমান গায়েনকর্তৃক গীত হইয়া আসিতেছে—তাহাতে এই বিষয়টি ভিন্নরূপে বৰ্ণিত হইয়াছে। তাহাতে লিখিত আছে, একদা ইশা খাঁ তাহার অপূর্ব শিল্পখাচিত সুবৃহৎ কোষা লইয়া যখন শ্ৰীপুরের