পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরবত্তী বাদসাহগণ bዖ@v9 মধ্যে দুইটি হিন্দুকে তিনি খুব ভালবাসিতেন। তঁহাদের একজন রায় আলমৰ্চাদ, ইহাকে নবাব “রায় রায়া” উপাধি দিয়াছিলেন, অপর জগৎ শেঠ ; ইহাদের পরামর্শে কাজ করিয়াই ইনি সরকারী আয় এত বাড়াইতে পারিয়াছিলেন। ইহারা নবাবের এত প্ৰিয় ছিলেন যে মৃত্যুর পূর্বে যে সকল চুক্তিতে স্বীকার করাইয়া পুত্র সরফরাজ খাকে উত্তরাধিকারি- পদে মনোনীত করেন, তাহার প্রধান এক দফা এই যে, তিনি সর্ববিষয়ে রায়রায়া ও জগৎ শেঠের মত লইয়া কাজ করিবেন। মীরজুমলা যেরূপ অতিরিক্ত পরিমাণে মিতব্যয়ী ছিলেন, সুজা উদ্দীন তেমনই অপরিমিত বিলাসী ছিলেন, তিনি তাহার রাজধানী যাহাতে দিল্লীর সঙ্গে সমকক্ষতা করিতে পাবে তাহার চেষ্টা কবিয়াছিলেন । ১৭৩৮ খৃঃ তাহার সেনাপতি আলিবর্দী খাঁ পাটনার দাসু্যদের অত্যাচার নিবারণ কবেন এবং ঐ সময়ে মির হবিব নামক তঁাতার অন্য এক সেনাপতি ত্ৰিপুৰাব রাজভাণ্ডাব লুণ্ঠন করিযী। তাহাকে অনেক অর্থ দেন। কথিত আছে, সুজা উদ্দীনের সমযে ত্রিপুরা বাজ্যের একাংশের নাম পবিবত্তিত হইয়া “রোসনাবাদ” হইয়াছিল । সরফরাজ খ-১৭৩৯-৪০ খৃঃ ১৭৩৯ খৃষ্টাব্দে সুজা উদ্দীনের মৃত্যু হইলে তৎপুত্র সরফবাজ গা বঙ্গের মসনদে অধিষ্ঠিত স্থান । সবষ্যদ্বাজ খাঁ ১৭৩৯-৪০ খৃঃ পৰ্য্যন্ত রাজত্ব কবেন । এই সৌখীন নৃপতিৰ অনাব মহলে ১,৫০০ বৰ্মণী ছিলেন, ইহাদের লইয়া তিনি প্ৰমত্তাবস্তাষ দিন বাত্ৰি কাটাইতেন কিন্তু তিনি সুবাপায়ী ছিলেন না। কোন সুন্দরী রমণীর কথা শুনিলে তিনি অসহিষ্ণু হইয়া ন্যায়-অন্যান্য বোধ হারাইতেন ! সিংহাসনে আরোহণ করিযাই তিনি নাদির সাহের আক্রমণে দিল্লীর দুব্যবস্থার কথা শুনিতে পাইলেন । ভয পাইয়া ইনি বাঙ্গলার তিন সনের বাকী খাজনা নাদিব সাহিকে পাঠাইলেন, শুধু তাঃ "ই নহে-নাদিব সাতের নামাঙ্কিত করিয়া তিনি মুদ্রার প্রচলন কবিলেন । এই ঘটনা পরিশেষে পৃষ্ঠাহাৰ শত্রুরা যন্ত্রস্বরূপ ব্যবহাবি কবিয উত্তবকালে দিল্লীশ্বর সম্রাট মহম্মদ সাহাব মন নবাবের প্রতি বিমুখ করিয়া দিয়াছিল। যে তিন ব্যক্তিকে বিশ্বাস করিতে র্তাহার পিতা বিশেষ কবিয়া উপদেশ দিয়াছিলেন, তাহদের মধ্যে হাজি আহম্মদ একজন, বাকী দুইজন আলমৰ্চাদ ও জগৎ শেঠের কথা পূর্বেই আমবা বলিয়াছি। প্রথম প্রথম নবাব ইহাদের কথামত চলিতেন। কিন্তু তিনি স্বেচ্ছাচারী হইয়া ইহাদের দুইজনকে বিষম চটাইয়া দেন। হাজি আহম্মদের নাতি ও নাতিনীর মধ্যে একটি বিবাহ সুস্থির হইয়াছিল, ইনি তাহা ভাঙ্গাইয়া দিয়া কন্যাটিকে তাহার নিজের ছেলের সঙ্গে জোর করিয়া বিবাহ দেন । জগৎ শেঠের পুত্রের সঙ্গে একটি অপূর্বরূপসী কন্যার বিবাহ হইয়াছিল। জগৎ শেঠ তাহার পুত্রবধূকে নবাবের অন্তঃপুরে পাঠাইতে বাধ্য হইয়াছিলেন, যদিও নবাব কোন ব্যভিচার করিতে সুবিধা পান নাই। এই ঘটনায় জগৎ শেঠের পরিবারে যে কলঙ্কেবা দাগ পড়িয়াছিল, তাহাতে শেঠজীব উচ্চ-কুলগর্ব খর্ব হইয়া গিয়াছিল। নবাবের শক্ৰগণ মহম্মদ সাহের দরবারে এই সকল কথা এবং নাদির সাহের প্রতি তঁাহার পক্ষপাতিত্ব ও সম্রাটুকে অবজ্ঞা করার কথা অতিরঞ্জিতভাবে বর্ণনা কবিয়াছিলেন