পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ክ”@\\ኃ বৃহৎ বঙ্গ সঙ্কল্প করিলেন। তিনি তদনুসারে মুরাসিদ খাকে লিখিলেন--তিনি যদি স্বেচ্ছায় উডিন্যা ত্যাগ করেন, তবে তাহার সমস্ত ধন-রত্ন ও পরিবারবর্গ লইয়া যেখানে ইচ্ছা যাইতে পারেন, যাহাতে র্তাহার অবসরগ্রহণ ও উড়িষ্যা হইতে প্ৰয়াণ নিরাপদ হয় তাহার সমস্ত ব্যবস্থা তিনি করিবেন। এই প্ৰস্তাবে সম্মত না হইলে যুদ্ধ ভিন্ন গত্যন্তর নাই। মুরাসিদ খা শান্তিপ্রিয় ভােলমানুষ ছিলেন--তিনি এই প্ৰস্তাবে সম্মত হইতে উদ্যত হইলে তঁাহার স্ত্রী দুৰ্দনা বেগম সিংহীর মত বিক্রমে তঁহাকে কাপুৰুষতার জন্য ভৎসনা কবেন । র্তাহার আমীরগণও শেষপৰ্য্যন্ত লড়াই করিতে আগ্ৰহ প্ৰকাশ করেন। সুতরাং যুদ্ধ হইল, আলিবর্দীর জয় হইল। মুরাসিদ পালাইয়া দাক্ষিণাত্যে যাইয়া মসলিপত্তনেব ফৌজদার আনোয়াব উদ্দী খাঁর আশ্রয় লাভ করিলেন ; সৈয়দ মহম্মদ উড়িষ্যার শাসনকর্তা নিযুক্ত হইলেন। গোলমাল এখানেই পামিল না, সৈন্যদ মহম্মদ তাহার নিষ্ঠুর ব্যবহার এবং সুন্দবী রমণী-সংগ্ৰহাদি ব্যাপারদ্বারা প্ৰজাদিগকে উত্তেজিত করিয়া তুলিলেন, তাহারা মুরাসিদ খাকে পুনরায় আসিয়া শাসনভার লাইতে আমস্ত্ৰণ কৰিল । কিন্তু তিনি এই গোলমালের মধ্যে আসিয়া পড়িতে স্বীকৃত না হওয়াতে বখার খাকে নেতা করিয়া অতি গোপনে একদল লোক সৈয়দ মহম্মদকে বন্দী করিয়া ফেলিল । বাখরা খা উড়িষ্যা দখল করিয়া বসিলেন, এদিকে সৈয়দ মহম্মদের জন্য নবাবের ভ্ৰাতা হাজি মহম্মদ ও পরিবারবর্গ ভাবিয়া আকুল, তাহারা সৈয়দকে নিরাপদে পৌছাইয়া দিবার সত্তে সন্ধি করিতে নবাবকে উপদেশ দিলেন ; কিন্তু আলিবর্দী কোনকালেই ভয়প্ৰদৰ্শন কিংবা স্বাঘ বিপদের আশঙ্কায় দুর্বলতা দেখাইতে প্ৰস্তুত ছিলেন না। বখর খী সৈয়দ মহম্মদকে এমন ভাবে বন্দী করিয়া বাখিলেন যে, যুদ্ধে যদি বখর খ্যা পরাস্ত হন, তবে রক্ষকদিগের উপর আদেশ ছিল, যেন তাহাবা ৩ খনই বন্দীর মস্তকচ্ছেদন করিয়া ফেলে। যুদ্ধ হইল, বখর খী পদ্মাস্ত হইলেন, কিন্তু দৈবক্রমে সৈন্যদ মহম্মদ নিস্কৃতি লাভ করিলেন । আলিবর্দী খাঁ মহম্মদ মসুম খ্যার উপর উড়িষ্যাশাসনের ভাব দিয নিশ্চিন্তচিত্তে মৃগয়া করিতে লাগিলেন । এমন সমযে, অকস্মাৎ সংবাদ আসিল, ভাস্কর পণ্ডিত-প্রমুখ বৰ্গীরা বাঙ্গলাদেশে আসিয়া পড়িয়াছে। তাহাবা বঙ্গাধিপের কাছে "চোথ’ অর্থাৎ রাজস্বের চতুর্থাংশ দাবী কবিয়া বসিল ( ১৭৪১-৪১ খৃ; } ) নবাব টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাহারা অতি দ্রুত অভিযানপূর্বক আলিবর্দীৰ অবস্থা শঙ্কটাপন্ন করিয়া তুলিল। নবাব বদ্ধমানে আশ্রয় লইলেন, তঁাহাব সৈন্যগণ ছত্ৰভঙ্গ দুইল এবং মহাবাষ্ট্রায়ের চাবিদিকে লুণ্ঠনকাৰ্য্য চালাইতে লাগিল। দৃঢ় অধ্যবসায় এবং বিপদে সব্বদা উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দিয়াও আলিবর্দী খাঁ চারিদিকে সরিষায়ুল দেখিতে লাগিলেন । তিনি দশ লক্ষ টাকা দিয়া ভাস্কর পণ্ডিতের সঙ্গে সন্ধি করিতে চাহিলেন, কিন্তু সুচতুর বর্গ অবস্থা বুঝিয়া এককোটি টাকা এবং নবাবের সমস্ত হস্তী চাহিয়া বসিল । এরূপ অপমানজনক প্ৰস্তাবে আলিবাদী কিছুতেই সন্মত হইলেন না। যে দশ লক্ষ টাকা বৰ্গাদিগকে দিবেন বলিয়া মজুত রাখিয়াছিলেন, তিনি তাহ সৈন্যসংগ্রহে ব্যয় করিয়া যুদ্ধের জন্য প্ৰস্তুত হইতে লাগিলেন। এদিকে ভাস্কর পণ্ডিতকে তিনি সেই