পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

MyAM বৃহৎ বঙ্গ হইয়া কাজ করিতে আদিষ্ট হওয়াতে হিন্দু কারিগরদের হাত একটু বেশী স্বচ্ছন্দ ও গতিশীল হইয়াছিল । সকলেই অবগত আছেন যে, হিন্দুপণ্ডিত ও ভিষকগণ বোগদাদের রাজসভায় বিশেষরূপে আদৃত হইতেন। আমরা দেখিতে পাই ইসলামের বীরবরগণ ভারতবর্ষে ব্ৰাহ্মণ, শ্রমণ ও বৌদ্ধভিক্ষুদিগকে পাইলেই সংহার করিতেন, কিন্তু তঁহারা ভারতীয় কারিগরদিগকে রক্ষা করিতেন। মহম্মদ গজনী ভারতীয় মন্দিরাদির অতুলনীয় সৌষ্ঠব এবং স্থাপত্যের পর কাষ্ঠা দেখিয়া সহস্ৰ সহস্ৰ হিন্দুকারিগরকে গজনীতে রাজপ্ৰাসাদাদি নিৰ্ম্মাণ করিতে সঙ্গে লইয়া গিয়াছিলেন। গজনীতে তিনি হিন্দু রমণী ও হিন্দু কারিগরদিগের একটি হাট বসাইয়াছিলেন। সমস্ত মুশ্লিম-এশিয়ায় এই হাট হইতে দাসী এবং নিপুণ কারিগর ক্রয় করা হইত। এই কারিগরদের শ্রেষ্ঠ ছিল-মাগধ শিল্পীরা। ‘মাগধ বন্দীর’ ন্যায় মাগধ শিল্পীও জগতের সর্বত্র জয়মাল্য পাইয়াছিল। পাঠান আমলে হিন্দু কারিগরদের এই খ্যাতি লুপ্ত হয়। নাই। হাভেল সাহেব লিখিয়াছেন, হিন্দুস্থান হইতে কারিগরেরা যাইয়া ভিন্ন ধৰ্ম্ম ও ভিন্ন নাম গ্ৰহণ করিয়াছিল, তাহারা বিদেশে নূতন প্ৰভাবে পড়িয়া তদনুযায়ী জীবনযাত্রা নির্বাহ করিতে লাগিল । বাধ্য হইয়া তাহারা পামিস্ত, আরব, তুরস্ক, স্প্যানিয়ার্ড, ও ইজিপিসয়ান নাম গ্ৰহণ করিল। এই ভারতীয় শিল্পাচাৰ্য্যগণের বংশধরেরাই মুসলমান হইয়া সৰ্ব্বত্র প্রাচীন বৌদ্ধ শিল্প ও স্থাপত্যের frt statisfits ( A Haud book of Indian Art, p. 129) “Thousands of craftsmen, each expert in his own special branch, were forced into the পৃবিখীময় হিন্দুকারিগর ऐ*निविझे ईश्मांछिठा । service of Islam in different parts of Asia and Europe and set to work it discriminatoly at the bidding of their masters” (p. 29). হিন্দু কারিগরেরা “বিমান” নিৰ্ম্মাণ করিতে অভ্যস্ত ছিল, তাহারা সহজেই গম্বুজ করিতে পারিল । তাহারা মূৰ্ত্তি তৈরী করিতে নিষিদ্ধ হইল, কিন্তু তাহদের সূক্ষ্ম চারুশিল্প, যাহা নানারূপ সপুষ্পলতিকার ভঙ্গীতে মন্দিরদ্বারে প্রদর্শিত হইত, সেই শিল্পজ্ঞান ও হাতের অবলীলাক্রম ভঙ্গীদ্বারা তাহারা কোরানের “শ্লোক”গুলিকে মসজিদের দ্বারদেশে-- অতি সুন্দর করিয়া চারুশিল্পকাৰ্য্যে পরিণত করিল। তাহারা হয়ত মানুষের ছবি আঁকিতে নিষিদ্ধ হইল, কিন্তু মসৃণ টালির উপর এবং প্রাচীরের গায়ে নানারূপ বিচিত্ৰ চিত্র আঁকিয় তাহাদের শিল্পপ্রতিভা প্রদর্শন করিল। বৌদ্ধ যুগের ভূপ, তোরণ এবং মন্দিরাদি পাশাপাশি রাখিয়া এশিয়ায় ইসলামের মসজিদ ও সৌধমালায় হিন্দু কারিগরের এই হস্তচিহ্ন বহু দৃষ্টান্ত দ্বারা হাভেল সাহেব সপ্ৰমাণ করিয়াছেন; ইতিহাসের সাক্ষ্যও তঁাহার সহায় হইয়াছে। বস্তুতঃ বৌদ্ধযুগে স্থাপত্য ও চারুশিল্পের প্রভাব অতি আশ্চৰ্য্যভাবে সমস্ত এশিয়াতে এবং যুরোপের স্থানে স্থানে পরিব্যাপ্ত হইয়াছিল; তাহার আদি খুজিতে গেলে হয়ত আমরা অতল ঐতিহাসিক কুপের থৈ পাইব না। খৃঃ পূঃ ৫০•০ বৎসর পূর্বের মহেঞ্জোদারোতে যে সকল