পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V88 বৃহৎ বঙ্গ ঘোরতর হিন্দুবিদ্বেষী হইয়াছিলেন এবং হিন্দুধৰ্ম্মের অনিষ্ট করিয়াছিলেন” (সামাজিক ইতিহাস, ১১৫ পূঃ) । সুতরাং দেখা যাইতেছে। কালের গোলমাল দূর করিতে অসমর্থ হইয়া লেখকেরা দ্বিতীয় কালাপাহাড় নামক এক ব্যক্তির কল্পনাপূর্বক গোজামিল দিয়াছেন। কিন্তু অন্য এক স্থান হইতে আমরা যে সংবাদ পাইয়াছি, তাহাতে অনায়াসে এই গোলযোগের সমাধান श्या बांग्र । উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে জঙ্গলবাড়ীর দেওয়ানদের একখানি ইতিহাস সঙ্কলিত হইয়াছিল। জেমস ওয়াইজ সাহেব তখন ঢাকার সিভিল সার্জন, তিনি তৎকালের জঙ্গলবাড়ীর দেওয়ান শোভান দাদ খাকে এতদৰ্থে অনুরোধ করেন।” দেওয়ান সাহেব মুন্সী রাজচন্দ্ৰ ঘোষের উপর এই কাৰ্য্যের ভার দেন । মুন্সী মহাশয় বিশেষ তৎপরতার সহিত এই কাৰ্য্য আরম্ভ করেন। জঙ্গলবাডীর দপ্তরের দলিল, কাগজ-পত্ৰ, স্থানীয় প্ৰবাদ ও জনশ্রুতি প্রভৃতি যাবতীয় উপকরণ এজন্য সংগৃহীত হইয়াছিল কি মুন্সী মহাশয় কালীকুমার চক্ৰবৰ্ত্তী নামক জঙ্গলবাড়ী স্কুলের প্রধান পণ্ডিত, এবং ষ্টেটের প্রধান কৰ্ম্মচারী ইদ্রিস খ্যার বিশেষ সহায়তা প্ৰাপ্ত হইয়াছিলেন । পণ্ডিত মহাশয় ২০ বৎসর জঙ্গলবাড়ীতে ছিলেন এবং অনেক বিষয় অপর সকল ব্যক্তি হইতে বেশী জানিতেন । অত্যন্ত আন্তরিকতার সহিত এই কাৰ্য্য আরব্ধ হইলেও শোভান দাদ দেওয়ানের আকস্মিক মৃত্যুতে এই কাৰ্য্য কিছু কাল স্থগিত ছিল। কিন্তু নূতন দেওয়ান আজিম দাদ খাঁ স্বয়ং এই কার্স্যে উদ্যোগী হওয়াতে এই ইতিহাস সঙ্কলনে সমস্ত বিস্ত্র দূর হইল। এদিকে ঢাকা ডিভিসনের কমিসনার লাউস সাহেব এবং প্ৰখ্যাতনামা ( তখন তরুণবয়স্ক ) রমেশচন্দ্ৰ দত্ত মৈমনসিংহের এ্যাসিষ্টেণ্ট ম্যাজিষ্ট্রেট মহাশয়দের পুনঃ পুনঃ তাগিদে পুস্তকখানি সম্পূর্ণ হইল। এই পুস্তক একাদশ অধ্যায়ে বিভক্ত । বইখানি যে অভ্রান্ত তাহ বলা যায় না, তবে ইহার অধিকাংশ স্থল স্বেচ্ছাকৃত। ঈসা খাকে দাউদ খ্যার সহোদর প্রতিপন্ন করিতে যাইয়া লেখকগণ দেওযান বংশের রাজকীয় রক্ত ঘোষণা করিবার জন্য যে ঐতিহাসিক গোজামিল দিয়াছেন, তাই আধুনিক ঐতিহাসিকগণের চক্ষে সহজেই ধরা পড়িয়া গিয়াছে। কিন্তু দেওয়ানদের বংশ-গৌরব বুদ্ধির জন্য লেখক যে আয়োজন করিয়াছেন, তাহা ছাড়া আর সর্ব বিষয়ে তাহারা প্ৰামাণিক ঐতিহাসিক উপকরণের উপর নির্ভর করিয়াছেন ও সূক্ষ্ম বিচারশক্তির পরিচয় দিয়াছেন। প্রসঙ্গক্ৰমে যে সকল কথা লিখিয়াছেন তাহা সর্বৈব বিশ্বাস-যোগ্য । এই ইতিহাসে লিখিত আছে, কালাপাহাড় বাদসহ জালাল সাহের কন্যাকে বিবাহ করিয়াছিলেন। মুন্সী রাজচন্দ্ৰ ঘোষ প্ৰামাণিক ঐতিহাসিক সংবাদ পাইয়াই একথা লিখিয়াছিলেন, যেহেতু দেওয়ান বংশের গৌরবের সঙ্গে এই কথার কোন সংস্রব নাই। এখন যদি বাদসহ জালালের কন্যাকে কালাপাহাড় বিবাহ করিয়া থাকেন।--তবে ঐতিহাসিক কাল নির্ণয় সম্বন্ধে সমস্ত গোল চুকিয়া যায়। জালাল সাহের রাজত্ব কাল ১৫৬০৬৩ খৃঃ অব্দ। কালাপাহাড়ের কৰ্ম্ম-জীবনের ইতিহাস বাহা প্রামাণিক ইতিবৃত্তে পাওয়া স্বায়, তাহ ১৫৬৮ হইতে ১৫৭৫ পৰ্য্যন্ত। বেলোল লোদির নাম সম্বন্ধে ও জনশ্রুতিতে এই