পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গের প্রাদেশিক ইতিহাস—ত্রিপুরা-রাজ্য à Oyń খলংমা নামক স্থানে রাজধানী স্থাপন করিলেন। বরবক্ৰ-তীরে দক্ষিণ রাজার সৈন্যেরা আত্মকলহ করিয়া এবং মারামারি কাটাকাটি করিয়া অনেকে ( ৫০,০০০ ) ধ্বংস পাইল । দক্ষিণের মৃত্যুর পর তৈদক্ষিণ রাজা হইয়া মেখলী রাজার ( মণিপুরেশ্বরের) কন্যাকে বিবাহ করিলেন। সুতরাং ত্রিপুর-রাজগণ কাছাড় ও মণিপুরের রাজাদের সঙ্গে আদান-প্ৰদান দ্বারা তঁহাদের সামাজিক প্রশ্নটি আরও একটু জটিল করিয়া তুলিলেন। তৈদক্ষিণ হইতে একচল্লিশ স্থানীয় ভূপতি শিক্ষারাজ নরমাংস খাইতেন বলিয়া প্ৰবাদ আছে। এই সময়ে ছাম্বুল নগর (কৈলাসহরের অন্তর্বস্ত্ৰী ) শিবমন্দিরাদি শোভিত হইয়া সমৃদ্ধশালী হইয়া উঠে। দ্রুহ, হইতে ৯৫ স্থানীয় ‘কুমার রাজা’ অনেক সময়ে এই নগরীতে বাস করিতেন। কাছাড়ের সঙ্গে ত্রিপুর-রাজগণের সম্বন্ধ ঘনিষ্ঠতর হইল। দ্রুন্থ, হইতে ১০৭ স্থানীয় প্রতীত নামক ত্রিপুর-রাজের সহিত হেরম্বরাজের একসময়ে খুব বেশী ভাব হইয়াছিল। উভয় কুলই উত্তরকালে একব্যক্তি হইতে সস্তৃত, এজন্য দুই রাজা একত্র হইয়া উভয় রাজ্য শাসন করিবেন, এই মনস্থ করিয়াছিলেন। এদিকে কামাখ্যা, জয়ন্তী পাহাড় প্ৰভৃতি দেশের রাজারা দেখিলেন, এই দুই পরাক্রান্ত রাজা সম্মিলিত হইলে পার্শ্ববৰ্ত্তী রাজ্যগুলি ইহাদের রাজ্যের অন্তৰ্গত হইয়া যাইতে বিলম্ব হইবে না । সুতরাং তঁাহারা চক্রান্ত করিয়া এক সুন্দরী রমণীকে ইহাদেব মধ্যে ভেদ জন্মাইবার নানারূপ শিক্ষা দিয়া ভেটস্বরূপ রাজদ্বয়ের নিকট প্রেরণ করেন। তাহদের উদ্দেশ্য সফল হইয়াছিল । সুন্দ-উপসুন্দের মত, দুই রাজা এই রমণীকে উপলক্ষ করিয়া পরস্পরের সঙ্গে যুদ্ধবিগ্ৰহে উদ্যত হইয়াছিলেন । কিন্তু শেষে হেরম্বরাজ অনুতপ্ত হইয়া ত্রিপুর-রাজের বিরুদ্ধে সংকল্পিত অভিযান পরিত্যাগ করিলেন। রাজা হিমতি ( প্ৰতীত হইতে ৫ম স্থানীয় ) রাঙ্গামাটি দখল করেন। রাঙ্গামাটিতে ‘লিক’ নামক এক জাতি বাস করিত, তাহারা যুদ্ধে পরাস্ত হইল। এই রাজ্য অধিকার করিয়া ত্রিপুর-রাজ নিম্নভূমিতে অবতরণ করিয়া বঙ্গদেশের বিশাল-গড় প্রভৃতি পৰ্ব্বত-সন্নিহিত পল্লীগুলি দখল করিয়া লইলেন। রাঙ্গামাটিতেই হিমতি রাজার অতি বৃদ্ধ বয়সে মৃত্যু ঘটে - যে স্থানে তঁাহার ভৌতিক দেহ চিতাগ্নিতে দগ্ধ করা হয়, সেই স্থানের নাম ‘বৈকুণ্ঠপুর” দিয়া ত্রিপুরবাসীরা এক মঠ নিৰ্ম্মাণ করেন। ७१'श्। হইতে ১৩৩ স্থানীয় ছেংথোম্পা রাজার সময়ে গৌড়ের রাজার এক প্ৰবলপরাক্রান্ত সেনাপতি ছিলেন। তিনি ত্রিপুর-রাজ্যের দক্ষিণাংশ লুণ্ঠনাদি করাতে উভয় রাজার মধ্যে যুদ্ধ হইবার উপক্রম হইল। সেনাপতি হীরাবন্ত থা *"******" গৌড়েশ্বরেব দুই তিন লক্ষ সৈন্য লইয়া ছেংথোম্পার সহিত যুদ্ধ করিতে আসিলেন। ত্রিপুর-রাজ ভীত হইয়া সন্ধির প্রস্তাব করিতে আগ্রহ প্ৰকাশ করিতে লাগিলেন, কিন্তু ত্রিপুরার মহারাজ্ঞী ত্রিপুরাসুন্দরী স্বীয় কাপুরুষ মহারাজী ত্রিপুরাসুন্দরী । স্বামীকে বিস্তর ভৎসনা করিয়া স্বীয় সৈন্যদলের নেতৃত্ব করিতে হস্তিপৃষ্ঠে আরোহণ করিলেন। র্তাহার উৎসাহবাক্যে ত্রিপুর-সৈন্যেরা জীবন পণ করিয়া হিমতি রাজা । বিশাল-গড়, বৈকুণ্ঠপুর