পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৃহৎ বঙ্গ به چ | হাসিতেছেন। ব্ৰাহ্মণের ব্ৰহ্মার মুখ হইতে উদ্ভূত হইয়া অন্যান্য জাতিকে নগণ্য মনে করিতেছেন। আভিজাত্যের মূলে এই সকল গল্প ও রূপ-কথা। কোন কালে কেহ কি এগুলি সত্য বলিয়া গ্ৰহণ করিতে পারেন ? তথাপি একথা নিশ্চিত যে রাজপুত ও আৰ্য্যাবৰ্ত্তের পশ্চিমে অবস্থিত অপরাপর দেশের রাজাদের অপেক্ষা ত্রিপুরা ও প্ৰাগজ্যোতিষপুরের রাজাদের বংশাবলী সুপ্রাচীন। প্ৰাগজ্যোতিষপুর বিনষ্ট হইয়াছে—অহম রাজারা নরকবংশীয়দের উচ্ছেদ সাধন করিয়াছেন, কিন্তু ত্রিপুরার গৌরব এখনও অক্ষুন্ন। কাছাড়ের রাজাদের (১) ঘটোৎকচ হইতে, (২) মেঘবৰ্ণ, (৩) মেঘবল, (৪) তাম্রধ্বজ, তৎপরে (৫) কেতুধবাজ হইতে অর্কধবজ পৰ্য্যন্ত ৪৫ জন “ধবজ”-ঔপধিক এবং ৫০ সংখ্যক প্ৰতাপনারায়ণ হইতে মদননারায়ণ পৰ্য্যন্ত ৭ জন “নারায়ণান্ত” ঔপধিক, তৎপরে (৫৯) চিত্ৰধ্বজ হইতে হেমধবজ পৰ্য্যন্ত পুনরায় ৭ জন ধ্বজ-ঔপধিক,--(৬৪) শিখণ্ডীচন্দ্ৰ হইতে বীরচন্দ্ৰ পৰ্য্যন্ত ১৫ জন “চন্দ্ৰ” উপাধি-বিশিষ্ট এবং (৭৯) পুণ্ডরীকক্ষ হইতে ১১০ গোবিন্দনারায়ণ পৰ্যন্ত ‘ধ্বজ” ও “নারায়ণ” এই দুই উপাধিরই রাজাদের নাম এই দীর্ঘ বংশাবলীতে পাইতেছি। স্বৰ্গীয় কৈলাসচন্দ্ৰ সিংহ মহাশয় তাহার “রাজমালায়” এই সকল নামের তালিকা দিয়াছেন। ( ২৫৬-২৬১ পৃঃ ) { শুধু কতকগুলি নামের তালিকা দেওয়া নিম্প্রয়োজন, বিশেষ যখন সেই রাজবংশ এখন লুপ্ত। এই জন্য আমরা বিরত হইলাম হাণ্টারের Statistical Account of Assam ri$ SCP আর একটি বংশাবলী দেওয়া হইয়াছে ( ২য় খণ্ড, ৪০৩ পৃঃ ) । এই সকল বংশাবলীর কতকগুলি প্ৰবাদ ও পৌরাণিক উপাখ্যানের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। প্রত্নতত্ত্ববিদগণের মধ্যে কেহ কেহ অনুমান করিয়াছেন, ‘কাছাড়’-নেপালী শব্দ । কেহ কেহ বলেন, উহা সংস্কৃত একটি শব্দ হইতে উদ্ভূত, তাহার অর্থ “প্ৰান্তদেশ।” পুরাকালে এই দেশ সম্ভবতঃ “মেচ’ বা মেচ্ছ জাতির নিবাস ছিল । একটি সুবিস্তৃত দেশে বডো এবং তৎসংমিশ্ৰিত ভাষা প্ৰচলিত, তাহাতে কেহ কেহ অনুমান করেন যে এককালে হয়ত সমগ্ৰ আসাম এবং বঙ্গ দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল সমস্তই "বডো’ সাম্রাজ্যের অন্তৰ্গত ছিল। কাছাড়ীদের কোন লিখিত ইতিহাস পাওয়া যায় না,-তাহদের সহিত অহম রাজাদের যুদ্ধবিগ্রহের কথা আসাম দেশীয় বুরুঞ্জীতে প্রাসঙ্গিক ভাবে উল্লিখিত আছে। ত্ৰয়োদশ শতাব্দীতে কাছাড়ীরা ব্ৰহ্মপুত্রের সমস্ত দক্ষিণ উপকূল, অর্থাৎ দিখু হইতে কল্পাং পৰ্যন্ত এবং ধানশ্ৰী উপত্যক এবং বৰ্ত্তমান উত্তর-কাছাড় বিভাগ অধিকার করিয়াছিল। ১৪৯০ খৃঃ অব্দে ইহারা অহমাদিগকে পরাস্ত করিয়া তাহাদিগকে সন্ধিবন্ধনে আবদ্ধ হইতে বাধ্য করিয়াছিল। ১৫২৬ খৃঃ অব্দ হইতে ১৫৩৬ খৃঃ অব্দ পৰ্য্যন্ত আহমদিগের সহিত অবিরাম যুদ্ধবিগ্ৰহ চলিতেছিল--উভয়-পক্ষের জয়পরাজয় ঘটিয়াছিল। কিন্তু পরিশেষে অহমদেব জয় হইয়াছিল! এই যুদ্ধে কাছাড়া-রাজ খুনখার বন্দী হইয়াছিলেন এবং তঁাহার আত্মীয় দেৎসংকে রাজপদ দেওয়া হইয়াছিল। কিন্তু দেৎসং পুনরায় বিদ্রোহী হওয়াতে অহমগণ র্তাহার রাজধানী ধ্বংস করিয়া ফেলে,- এইবার ১৫৩৬ খৃষ্টাব্দে কাছাড়ীরা দিমাপুর ছাড়িয়া মাইবঙ্গে রাজধানী স্থাপন করে। १ींवळेौ ।