পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y ob^\9 বৃহৎ বঙ্গ স্থাপন করিতে পারি না। পরাক্রান্ত হইয়া যাহারা চন্দ্ৰবংশীয় বলিয়া পরিচয় দেন, হীন অবস্থাতে পড়িয়া তাহদের বংশধরগণ যে-কোন জাতির সহিত মিশিয়া গিয়াছেন, তাহা আমরা সাভাবের শিলালিপি হইতে জানিতে পারিয়াছি। কথিত আছে, ত্রিপুরেশ্বর ছেং ফাহাগ ( স্বধৰ্ম্মপা বা সুধৰ্ম্মপা ) কৈলাগড়ে রাজধানীতে একটি বৈদিক যজ্ঞ সম্পাদন করেন। তাহ নিধিপতি নামক এক বিশিষ্ট পণ্ডিত ও চরিত্রবান ব্ৰাহ্মণেব নেতৃত্বে নিৰ্বাহিত হয়। এই যজ্ঞোপলক্ষে শ্ৰীহট্ট-জেলায় বহু বৈদিক ব্ৰাহ্মণের আগমন হয়। নিধিপতি দক্ষিণস্বরূপ রাজার নিকট অনেক ভূমি দানপ্ৰাপ্তইন ( ৬০৪ ত্রি = ১১৯৪ খৃঃ) । কিন্তু ইহার অনেক পূর্ব হইতে পূৰ্ব্ব-ভারতে বহু ব্ৰাহ্মণ বিদ্যমান ছিলেন, ভাস্করবম্মাব তাম্রশাসন হইতে আমরা তাহা জানিতে পারিয়াছি। মুসলমান অধিকাবের প্রাক্কালে শ্ৰীহট্ট রাজ্য এই তিন ভাগে বিভক্ত ছিল । ১ ! গৌড়-বৰ্ত্তমান শ্ৰীহট্টের উত্তরাংশ এবং পূর্ব-দক্ষিণের কতকাংশ । ২ । লাউড়-গৌড়ের পশ্চিমাংশ,-বর্তমান হবিগঞ্জের কতকাংশ ও প্ৰায় সমুদয় श्रन्माम°ाॐ । ৩। জয়ন্তীয়া-শ্ৰীহট্টের উত্তর-পূর্বাংশ,-সুরমা নদীর সীমা পৰ্য্যন্ত, ইহার দক্ষিণপূর্বে ত্রিপুরা ! ইহা ছাড়া সমগ্র জরান্তীয়া পাহাড় ইহার অন্তর্গত। এই তিনটি বৃহৎ ভাগ ছাড়া তারপ, ইট ও প্ৰতাপগড় মুসলমান বিজয়ের পর গৌড়ের अस्युड श्व | মুসলমানেরা গৌড়গোবিন্দের হস্ত হইতে শ্ৰীহট্টের অধিকার বলপূর্বক গ্ৰহণ করেন। এই গৌড়গোবিন্দ কে তাহা জানা যায় নাই। নানা গল্পে জড়িত হইয়া এই রাজার ইতিহাস অতীত শ্ৰীহট্টের একটা প্ৰহেলিকা হইয়া আছে। কথিত আছে, তিনি নির্বাসিত কোন ত্রিপুর-রাজ-কন্যার গর্ভে এবং সমুদ্রের ঔরসে জাত। প্ৰাচীন উপাখ্যানে সমুদ্র একাধিক রাজার জনয়িতা রূপে কল্পিত হইয়াছেন। এই আখ্যানের মধ্যে যদি কিছু সত্য থাকে, তবে রাজকুমারীকে কোন অভিযোগে অভিযুক্তা, কলঙ্কিতা ও গর্ভবতী ত্রিপুর রাজকন্যা বলিয়া ধরা যায়। দ্বিতীয় প্ৰবাদ এই তিনি গৌড় হইতে আসিয়া শ্ৰীহট্ট দখল করিয়াছিলেন বলিয়া গৌড়গোবিন্দ নামে পরিচিত; সুহেল-ই-এমন নামক পারস্য ভাষায় লিখিত গ্রন্থে এই প্ৰবাদটি পাওয়া যায় ! তৃতীয় অনুমান, তিনি হয়ত বা সেই নরকবংশীয়দেরই কেহ হইবেন । যে বংশে কেশব ও ঈশান জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন-সেই বংশে জন্মগ্রহণ করিয়া তিনি হাটকেশ্বরের মন্দিরের কর্তৃত্ব উত্তরাধিকারসূত্ৰে পাইয়াছিলেন। কিন্তু তিনি শ্ৰীহট্টের আগন্তুক এই অনুমান যেন একটু প্ৰবল দৃষ্ট হয়, যেহেতু সে দেশের লোকে বা তঁহার পূর্ব-ইতিহাসের কোন সন্ধানই রাখেন না। সে দেশের লোক হইলে অন্ততঃ কোন একটা প্ৰবাদ থাকিত। এদিকে শ্ৰীহট্টের ৬/৭ মাইল দূরে “পাতার” নামক এক জাতি আছে।--তাহারা সহরে কয়লা, কাঠ, পাতা ইত্যাদি বিক্রয় করে, তাহারা আপনাদিগকে “গুরুগোবিন্দী” বলিয়া পরিচয় দিয়া থাকে। মুসলমানেরা গৌড়গোবিন্দ কে ?