পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গের প্রাদেশিক ইতিহাস-শ্ৰীহট্ট d odè) সুবিদনারায়ণের সঙ্গে যুদ্ধ করিতে প্রেরিত হইয়াছিলেন । কেহ কেহ বলেন শের সাহের সময়ে এই ঘটনা সংঘটিত হইয়াছিল । সুবিদনারায়ণের কনিষ্ঠা কন্যা ভানুমতী অতিশয় রূপসী ছিলেন। খেয়াজ ওসমানের উপর তঁহাকে ধরিয়া লইয়া যাইবার হুকুম ছিল। সুবিন্দনারায়ণ সিংহ-বিক্রমে যুদ্ধ করিয়া রণক্ষেত্রে নিহত হন। তাহার সাধবী পত্নী কমলা সহমৃতা হন এবং ভানুমতী বিষ খাইয়া আত্মহত্যা করেন। সুবিদনারায়ণের চার পুত্র-জামাল খা, কামাল খাঁ, ইজি খাঁ ও ঈশা খা নাম গ্ৰহণপূর্বক মুসলমান-ধৰ্ম্মাবলম্বী হইয়া বিপদ হইতে আত্মরক্ষা করিয়াছিলেন। তদবধি এই ব্ৰাহ্মণ রাজার সম্পত্তি মুসলমান-অধিকৃত হইয়াছিল। অচ্যুতবাবু লিখিয়াছেন, “রাজা সুবিদনারায়ণের বংশীয়গণ মুসলমান ধৰ্ম্মাবলম্বী হইলেও হিন্দু রীতিনীতির প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখিয়া চলেন।” প্ৰতাপগড় এক সময়ে ত্রিপুর-রাজ্যের অন্তৰ্গত ছিল, সুতরাং ইহার ইতিহাস সেই দেশের ইতিবৃত্তের অন্তর্গত। পরবর্তী সময়ে শ্ৰীহট্টের দত্তবংশোদ্ভুত রাধারমণ জঙ্গলবাড়ীর দেওয়ানদের বংশীয় মুসলমান শাসনকৰ্ত্তার হস্ত হইতে কৌশলক্রমে অনেক সম্পত্তি অধিকার করিয়া ‘নবাব’ উপাধি গ্ৰহণ করেন। ইনি অতি দুৰ্দান্ত প্ৰকৃতির লোক ছিলেন । কথিত আছে, একটা মাদুবে তাহার দুই একজন কৰ্ম্মচারী শুইয়া ছিল, তাহদের পা মাদুর হইতে বাহির হইয়াছিল, এই জন্য তিনি সেই মাদুরনিৰ্ম্মাতাকে ছোট মাদুর প্রস্তুত করার অপরাধে অভিযুক্ত কবিয়া তাহার পা কাটিয়া দিয়াছিলেন। তিনি একদিন নৌকাযোগে যাইতেছিলেন, নৌকার মাঝি একটা বড় মৎস্য বঁড়িশি দিয়া ধরিয়াছিল,—তাহার বিনা-অনুমতিতে সে ঐ রূপ করিল, এজন্য তিনি সেই মাঝিকে জলে ডুবাইয়া মৎস্যের মত গলায় বড়শি বিধাইয়া হত্যা করেন। কিন্তু এসকল নিতান্তই উপগল্পের মত শোনায় । রাধারাম তাহার সরল-প্ৰাণ বন্ধু জমিদার কানুৱামকে নিমন্ত্ৰণ করিয়া আনিয়া মিথ্যা সন্দেহে কালীর নিকট বলি দিতে চাহিয়াছিলেন। কানুরামের ভূত্য এই অভিসন্ধি টের পাইয়া র্তাহার প্রভুকে যুগীর প্রস্তুত একটা গিলাপের মধ্যে ঢুকাইয়া গভীর রাত্ৰে কঁধে কারিয়া ভীষণ বন্যজন্তুসন্ধুল দুখালিয়া পাহাড়ের জঙ্গল দিয়া লইয়া গিয়াছিল। সে কাহিনী ইতিহাসের পৃষ্ঠায় স্বর্ণক্ষরে লিখিবার যোগ্য। নবাব রাধারাম ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে হারিয়া ছদ্মবেশে পলায়নপর হইলেন। তিনি পথে আত্মহত্যা করেন এবং তৎপুত্ৰ কুমার জয়মঙ্গল ডোমের ছদ্মবেশে ঘুরিয়া ফিরিয়া অবশেষে স্থত হইয়া বন্দী হন। এখনও কৃষকগণ লাঙ্গল চালাইতে চালাইতে গাহিয়া থাকে৷-“কান্দেরে চরগোলার লোক দেশে দেশান্তর। জয়মঙ্গল আসিবে যবে চরগোলােৱ নগর। ডোম চাড়াল মিলিয়ারে বানাইয়া দিমুঘর।” arf« affaN পরিচিত কামাল খাঁ ও জামাল খাঁ সম্বন্ধে পলীগীতি পাইয়াছি। সুবিদনারায়ণের কন্যায় আত্মহত্য-সম্বন্ধেও সম্ভবতঃ পল্লীগীতি লিখিত হইয়াছিল, কিন্তু তাহাতে উদ্দোর পিণ্ডি বুদ্যোর ঘাড়ে পড়িয়াছে-"পূর্ববঙ্গ-গীতিকা” ਹ