পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ο Σ. Σ 8 বৃহৎ বঙ্গ রাজধানী করেন। ক্রমেই এই রাজ্যের প্রসার বৃদ্ধি হইতে থাকে। কিনুমল্প ( ৭৩৩१8२ ब्रू: ) ইন্দাস স্বরাজ্যভুক্ত করেন। কানুমল্ল (৭৫৭-৭৬৪ খৃঃ) কাকত অধিকার করেন, শূৱমল্প ( ৭৭৫-৭৯৫ খৃঃ) অধুনা মেদিনীপুরের অন্তর্গত বগাড়ী পরগনা স্বীয় রাজ্যের অন্তৰ্গত করিয়া নানা যুদ্ধে বিজয়ী হন। খড়গমলী (৮৪১-৮৬৪ খৃঃ) অধুনা খড়গপুর নামধেয় অঞ্চলটা জয় করিয়া স্বীয় নামানুসারে নগর স্থাপন করেন । জগৎমল্প (৯৯৪-১০০৭ খৃ: ) রাজধানী বিষ্ণুপুরে স্থাপিত কয়িয়া মন্দির ও প্রাসাদে তৎস্থান ছাইয়া ফেলেন এবং বিষ্ণুপুরকে বিশেষ সমৃদ্ধ করিয়া তোলেন । শূন্য পুরাণের লেখক রামাই পণ্ডিত তাহার সময়ে বর্তমান ছিলেন বলিয়া কথিত আছে। রামমল্ল ( ১১৮৫-১২০৮ খৃ: ) ও শিবসিংহমল্ল প্ৰভৃতি রাজাদের সময় বিষ্ণপুরের শ্ৰী ক্ৰমশঃ বদ্ধিত হইতে থাকে। জগৎমল্ল সৈন্যদের শৃঙ্খলা, দুৰ্গাদি নবপদ্ধতিতে নিৰ্ম্মাণ এবং সময়োপযোগী অস্ত্রবিদ্যা শিক্ষা দিয়া রাজ্যের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করেন এবং শিবমল্প বিষ্ণুপুর-রাজসভা সংগীতবিদ্যার অন্যতম প্রধান কেন্দ্রে পরিণত করেন। ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগ পৰ্য্যন্ত মল্লরাজারা সম্পূর্ণ স্বাধীন ছিলেন। বাহিরের সহিত তাহাদের সম্বন্ধ অল্পই ছিল। বীর হাম্বিরের পিতা ধাড়িমল্ল ( ১৫৩৯-১৫৪৭ খৃঃ) সর্বপ্রথম বঙ্গাধিপের অধীনত্ব স্বীকার করেন। কিন্তু এই অধীনত্ব নামে মাত্র ছিল। একটা রাজস্ব দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু রাজারা যখন যাহা ইচ্ছা দিতেন এবং কোন কোন সময় কিছুই দিতেন না। বীর হাম্বির রাজস্ব দেওয়া বন্ধ করিয়াছিলেন, এমন কি এক সময় বঙ্গবিজয় করিবার কল্পনাও তাঁহার মাথায় ঢুকিয়াছিল। ৪৯শ সংখ্যক নৃপতি এই বীর হাম্বির ( ১৫৮৭-১৬২০ খৃঃ বৈষ্ণব ধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করিয়া যে সকল উন্নতি করিয়াছিলেন, তাহ রাজশ্ৰীর কুণ্ডলে নূতন মূল্যবান মণিমুক্তা ংলগ্ন করিয়া দিয়াছিল। এই পুস্তকের ৭৫২-৫৬ পৃষ্ঠায় তৎসম্বন্ধে সবিস্তার আলোচনা করা হইয়াছে। বীর হাম্বিরের সময় হইতে চৈতন্য-সিংহের (১৭৪৮-১৮০২ খৃ: ) রাজত্ব কাল পৰ্যন্ত বিষ্ণুপুর রাজধানী বৈষ্ণব ধৰ্ম্ম-প্রচারের প্রধান কেন্দ্ৰস্বরূপ হইয়াছিল । বাঙ্গলার শিল্প ও স্থাপত্য-লক্ষ্মী বিষ্ণুপুর রাজাদের বাহু আশ্রয় করিয়া সগৌরবে দাড়াইয়াছিলেন। হলওয়েল সাহেব যে বিষ্ণুপুর ও তদুপান্তে ৩৬০টি মন্দিরের কথা বলিয়াছেন, তাহার অনেকগুলিই ১৬০০-১৮০২ খৃঃ অব্দ মধ্যে বৈষ্ণব প্ৰভাবের ফলে স্থাপিত হইয়াছিল। গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধৰ্ম্মের প্রধান কেন্দ্র সর্বপ্রথম ছিল-নবদ্বীপ। চৈতন্তের সন্ন্যাসের পর নবদ্বীপের আলোক নিবিয়া যায়। চৈতন্য অষ্টাদশ বৎসর পুরীতে ছিলেন, তাহার তিরোধান পৰ্য্যন্ত সেই আলোককেন্দ্ৰ পুৱীধামে প্ৰবৰ্ত্তিত হয়। তৎপরে কয়েক বৎসর– ১৫৩৩ হইতে ১৬০০ খৃঃ অব্দ পৰ্যন্ত কিঞ্চিৎ অধিক অৰ্দ্ধ শতাব্দীকাল সেই আলোক বৃন্দাবনে জ্বলিতে থাকে, যাঁটু গোস্বামীরা এই আলোক জ্বালাইয়া রাখিয়াছিলেন ; তাঁহাদের স্বৰ্গারোহণের পরে-বিশেষ জীবগোস্বামীর অন্তর্ধানের সহিত এই আলোক বৃন্দাবনে কতকটা নিৰ্বাপিত হইলে শ্ৰীনিবাস আচাৰ্যের