পাতা:বৃহৎ বঙ্গ - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মণিপুর, চেদি ও ত্রিপুরা সম্বন্ধে এদেশের দাবী VON) পণ্ড করিবার মানসে ষেরূপভাবে সমবেত রাজ্যবৰ্গকে উত্তেজিত করিয়াছিলেন, তাহা মহাভারতের পাঠক সকলেই অবগত আছেন ; ইনি সেকালে ষে একজন রাজচক্রবর্তী ছিলেন, তৎসম্বন্ধে কোনও সন্দেহ নাই । এখন এই রাজচক্ৰবৰ্ত্তী শিশুপালের চেদি কোথায় ? কোন কোন পণ্ডিতের মতে, বুন্দেলখণ্ড ও মধ্যভারতের অপর কয়েকটি দেশ (পূর্বে টােন্সি ও পশ্চিমে কলিসিন্ধ এই দুয়ের মধ্যবৰ্ত্তী) প্রাচীন চেন্দির অন্তর্গত ছিল । এই স্থানটিই বৌদ্ধসাহিত্যে চেদি বলিয়া উল্লিখিত । রাজস্থানের লেখক টড় অনুমান করেন, বুন্দোলখণ্ডের অন্তঃপাতি ছাদেরি প্ৰাচীন চেদি । কাহারও কাহারও মতে গ্ৰীকগণ ষে চন্দ্ৰাধতী (সন্দ্রাবতিস) নগরের নাম করিয়াছেন, তাহাই এই চাদেরি এবং এই স্থানটি মহাভারতের শিশুপালের রাজধানী ছিল। ইহা ললিতপুরের ১৮ মাইল পশ্চিমে স্থিত এবং বর্তমান চাদেরির ৮ মাইল উত্তরপশ্চিমে। এই স্থানে অনেক প্ৰাচীন কীৰ্ত্তি ও প্রাসাদাদির ধ্বংসাবশেষ দৃষ্টি হয়। আইন আকবরীর মতে এই নগরী সুপ্ৰাচীন এবং এক সময়ে প্রৰিল পরাক্রান্ত রাজাদের রাজধানী ছিল। ডাঃ ফুরার, জেনারেল কানিংহাম এবং বুলারের মতে বুন্দেলখণ্ডটাই প্ৰাচীন চেন্দিরাজ্য। স্কন্দপুরাণ ও বুেবাখণ্ডে ‘দাহলমণ্ডল”কে (বুন্দোলখণ্ডের প্রাচীন নাম) প্ৰাচীন চেদি বলা হইয়াছে। খৃ: শতাব্দীতে টেলেমি ষে মণ্ডল রাজ্যের উল্লেখ করিয়াছেন, তাহাই এই “দাহলমণ্ডল ’-শোন ও নিৰ্ম্মাদার উৎপত্তি স্থান-সংলগ্ন ভূভাগ ইহার অন্তৰ্গত। মহাভারতের সময় এই প্রদেশের রাজধানীর নাম ছিল মুক্তিমতি, গুপ্তদের সময় চৌদি রাজ্যের রাজধানী কালাঞ্জোর এবং কলচুরিদের সময় উহা মহিষমতি নগরী নামে পরিচিত ছিল (নন্দলাল দের ভৌগলিক ইতিহাস, ৪৮ পৃ: ) । পূৰ্ব্বোক্ত মতগুলি যদিও ঠিক একটা জায়গাকে নির্দেশ করে না, তথাপি মনে হয় মোটের উপর মধ্যভারতের বুন্দেলখণ্ডটাই প্ৰাচীন চেন্দিরাজ্য বলিয়া পণ্ডিতগণ স্বীকার করিয়াছেন । আমরা পূর্বেই বলিয়াছি, দেশ-প্রচলিত প্ৰবাদগুলি আমরা একেবারে উড়াইয়া দিতে চাহি না । ভারতবর্ণের প্রাচীন ভৌগলিক ইতিহাস এখনও সুদৃঢ়ভাৰে গড়িয়া উঠে নাই। এসময়ে প্ৰবাদগুলির উল্লেখ থাকা প্রয়োজন, হয়ত যাহার মূল্য নাই বলিয়া এখন মনে হইতেছে, কালে তাহার কোনরূপ মূল্য দাড়াইতে পারে। প্ৰায় অদ্ধ শতাব্দী পূর্বে (১৮৭৫ খৃঃ, ২৮শে মার্চ) “ ভাওয়ালের ইতিহাস * নামক একখানি পুস্তক প্ৰকাশিত হইয়াছিল। ইহার লেখক ভাওয়াল-জয়দেবপুর স্কুলের পণ্ডিত নবীনচন্দ্র ভদ্র তাহার পুস্তকের ২০/২১ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন, “ ভাওয়ালের উত্তর-পশ্চিমাংশে * দিঘলীর ছিটু’ নামক বহুদূর স্থান ব্যাপিয়া কতকগুলি প্রাচীন অষ্টালিকা ও প্রাচীরের চিহ্ন লক্ষিত হয় এবং তাহার চতুষ্পার্থে এক গড়খাই দৃষ্ট হয় ; অধুনা তাহ ঘোর * অরণ্যে পরিপূর্ণ হওয়াতে ব্যাজ, ভলুক ও সর্প্যাদি হিংস্ৰ জন্তুর আবাসস্থান হইয়াছে। যাতরাং তন্মধ্যে প্রবেশপূর্বক তথ্যানুসন্ধান করা দুঃসাধ্য। জনশ্রুতিতে জানা যায় ইহাই