পাতা:বৃহৎ বঙ্গ - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

yo V বৃহৎ বঙ্গ “প্রিয় জীবক, তুমি আমার হস্তীগুলি সুসজ্জিত করিতে বল ।” তখন রাজার আদেশে পাঁচশত হস্তিনী সুসজ্জিত হইল, সেই ৫০০ হস্তিনীর উপর সুবেশপরিহিতা পাঁচশত সুন্দরী আলোকবৰ্ত্তিকা ধারণ করিয়া নানাভূষণশোভিত বিশালকায় দ্বিরদে সমারূঢ় মহারাজ অজাতশত্রুকে বেষ্টন করিয়া চলিল। রাজা সেই রাত্রিকালে মহাসমারোহের সহিত রাজগৃহ হইতে জীবকের আমৰাটিকাভিমুখে যাত্রা করিলেন । বিশাল আমোন্তানের নিকটবৰ্ত্তী হইয়া রাজা সহসা ভয়াভিভূত হইয়া পড়িলেন, আশঙ্কায় তাহার শরীর রোমাঞ্চিত হইল । তিনি ভীত ও উত্তেজিতকণ্ঠে জীবিককে জিজ্ঞাসা করিলেন“জীবক ! তুমি কি আমাকে ছলনা করিয়া আনিয়া শক্রিহস্তে সমৰ্পণ করিতেছি ? দ্বিশতপঞ্চাশদধিক একসহস্ৰ ব্যক্তি যে স্থানে সমবেত, সেস্থান এমন নীরব কিরূপে হইতে পারে ? একটি কাশী কিংবা হাচির শব্দ পৰ্য্যন্ত শুনা যাইতেছে না। “মহারাজ, আমি আপনাকে ছলনা করিয়া শক্রিহস্তে সমৰ্পণ করিতে আনি নাই, আমি তদ্ধাপ পাষণ্ড নই। ঐ পাটমণ্ডপে দীপ জ্বলিতেছে, ঐ দিকে চলুন।" Angeview রাজা হস্তিপৃষ্ঠে , অনেকদূর অগ্রসর হইয়া যেস্থানে হস্তী আর চলে না, সেই স্থানে অবতরণ করিলেন এবং বঙ্গমণ্ডপের সমীপবৰ্ত্তী হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “জীবক, ভগবান বুদ্ধদেব ८कॉंग्रं * “ঐ মধ্যস্থ স্তম্ভের সম্মুখে পূৰ্ব্বমুখ হইয়া শিষ্য-পরিবেষ্টিত বুদ্ধদেব উপবিষ্ট আছেন o/ তখন রাজা অগ্রসর হইয়া শ্ৰদ্ধাসহকারে একপাশ্বে দাড়াইলেন । রাজা দাড়াইয়া একবার সেই নিঃশব্দ বিশাল জনতার প্রতি দৃষ্টিপাত করিলেন ; উৰ্ম্মিহীন, নিৰ্ম্মল হ্রদের ন্যায় শিষ্মমণ্ডলী নীরব ও প্ৰশান্ত । রাজা উচ্ছাসে বলিয়া উঠিলেন, “কি সুন্দর ! কি প্ৰশান্ত । আমার প্রাণাধিক কুমার উদায়িভদের ( উদায়িভদ্রের ) জীবন যেন এইরূপ শান্তিপূর্ণ হয়।” অনন্তর রাজা কৃতাঞ্জলিপুটে ভগবান বৃদ্ধ এবং তঁহার শিষ্যমণ্ডলীকে প্ৰণাম করিয়া উপবেশন করিলেন । তিনি বলিলেন, “ভগবান বুদ্ধদেবের আদেশ হইলে আমি কয়েকটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিতে পারি।” “মহারাজ, আপনার যাহা ইচ্ছা জিজ্ঞাসা করিতে পারেন।” “হে দেব ! সংসারে নানা শ্রেণীর লোক কাজ করিয়া থাকে । সারথি, অশ্বরক্ষক, তীরন্দাজ, নিশানবাহক, সেনাপতি, সৈনিক, পাচক, নাপিত, মালাকার, মোদক, তন্তুবায়, কুম্ভকার, জ্যোতিবিদ, সচিব প্রভৃতি শত শত শ্রেণীর লোক জীবিকা অর্জন করিতেছে। ইহার স্ব স্ব বৃত্তি অবলম্বন করিয়া ইহজীবনেই স্বকৃত কৰ্ম্মের পুরস্কার লাভ করিতেছে। তাহারা স্বীয় পরিশ্রমজাত অর্থে পরিবার পালন করিয়া বন্ধুবান্ধবসহ নানারূপ সুখভোগ করিয়া জীবনযাপন করিতেছে। শ্রমলব্ধ অর্থ দানধ্যানাদি ব্যাপারে ব্যয় করিয়া পরকাল-সম্বন্ধেও তাহারা মুখের পথ স্থির করিয়া রাখিতেছে। গাৰ্হস্থ্য আশ্রমের কৰ্ম্মের পুরস্কার ইহজীবনেই লক্ষিত হইতেছে কিন্তু সন্ন্যাসাশ্রমের কোন পুরস্কার কিংবা লাভ আপনি এরূপ দেখাইতে