পাতা:বেওয়ারিশ লাস - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
দারােগার দপ্তর, ৭৩ম সংখ্যা।

 এই বলিয়া আমি বালকটীকে সঙ্গে লইয়া গাড়িতে গিয়া উঠিলাম। রব্বানির স্ত্রী একরূপ অন্ধ-অচেতন অবস্থায় সেই স্থানে বসিয়া রহিল। সেই স্থানে আরও অনেক কর্ম্মচারী উপস্থিত ছিলেন, তাঁহাদিগের মধ্যে কেহবা সেই স্ত্রীলোকটীর নিকটেই রহিলেন, কেহবা বালক-বালিকাগণের সহিত কথা কহিতে লাগিলেন, আর কেহবা আমার সহিতই গমন করিলেন।

 গাড়িতে উঠিয়া গাড়িবানকে দ্রুতগতি চালাইতে কহিলাম। ক্রমে গাড়ি আসিয়া মেহের আলির বাড়ীর সম্মুখে উপস্থিত হইল।

 মেহের আলির বাড়ীর সম্মুখে গিয়া গাড়ি উপস্থিত হইলে, সেই বালকটী কহিল, “আমি গাড়ির ভিতর বসিয়া রাস্তা ঠিক পাইব না, গাড়ির উপর গিয়া বসিলে যে রাস্তা দিয়া আমি সর্ব্বদা গমন করিয়া থাকি, সেই রাস্তা দিয়া অনায়াসেই এই গাড়ি সেই স্কুলে লইয়া যাইতে পারিব।”

 বালকের কথায় আমি সম্মত হইলাম। বালক গাড়ি হইতে বহির্গত হইয়া কোচবাক্সের উপর গিয়া উপবেশন করিল।

 বালকের নির্দ্দেশ মত গাড়ি চলিতে লাগিল। ক্রমে দেখিলাম, গাড়ি গিয়া পার্ক স্ট্রীটের একটী প্রকাণ্ড বাড়ীর সম্মুখে গিয়া উপস্থিত হইল। সেই প্রকাণ্ড বাড়ী আমরা চিনিতাম। উহা প্রকৃতই একটী প্রকাণ্ড স্কুল। ইহাতে ইংরাজ বালকের সংখ্যাই অধিক, এবং তাহাদিগের মধ্যে অনেকেই সেই স্কুলের ভিতর রাত্রিদিন বাস করিয়া থাকেন।

 সেই স্থানে বালকটী গাড়ি হইতে অবতরণ করিয়া আমাকে কহিল “আমার সঙ্গে আসুন, এই স্কুলে আমার নানা কর্ম্ম করিয়া থাকেন।”