পাতা:বেণী রায় (সংখ্যা ১) - সত্যরঞ্জন রায়.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ তিনি গদগদম্বরে কহিলেন, “জয়া, ইহকালে পরকালে আমি তোমারই ।” অভাগিনী এখন আর বিষাদিনী নহেন। তঁহার মুখমণ্ডল পুলকে প্ৰফুল্ল হইয়াছে। তিনি ধীরে ধীরে কহিতে লাগিলেন, “হৃদয়সৰ্ব্বস্ব, আমি সব হারাইয়া, সব খোয়াইয়াও যে তোমার করুণায় বঞ্চিত হই নাই, ইহাই আমার পরম লাভ।” বেণীমাধবের একবার মনে হইল, জয়া বুঝি বাচিবে, আবার অনুমান হইল, হয়ত ইহা নির্বাণোন্মুখ দীপের শেষ দীপ্তি, ক্ষণিক, স্নানোজ্জল। পরবর্তী ধারণাই ঠিক হইল। জয়ার জীবনীশক্তি দ্রুতভাবে ক্ষীণতর হইয়া আসিতেছিল। তিনি এবার অতি মূঢ় •কণ্ঠে কহিলেন, “নাথ, আমি চলিলাম,-বিমলাকে দেখিও,- আশীৰ্ব্বাদ কর, পরজন্মে যেন তোমাকে পাইয়া না হারাই।” ইহার পর জয়ার বাকুরোধ হইল। তঁহার অঙ্গ অসাড় ও চক্ষুতারকা স্থির হইল, জীবনপ্রদীপ নিৰ্বাপিত হইল। বেণীমাধবের চিত্ত সংযমের রাশ আর মানিল না । তিনি বালকের ন্যায় কঁাদিয়া উঠিলেন। হায় মানুষের সুখ ! অনন্ত দুঃখের ঘনান্ধকারে চপলার বিকাশের মত কত ক্ষণিক, কত অস্থির তুই ! চপল এই হাসে, এই মিলায়, আঁধার বাড়াইয়া দেয় ; মানুষের সুখও সেইরূপ,- এই আসে, এই যায়, দুঃখ বাড়াইয়া যায়। (Cاب