পাতা:বেণী রায় (সংখ্যা ১) - সত্যরঞ্জন রায়.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষোড়শ পরিচ্ছেদ। জয়ার শোকে বেণীমাধব চেতনাশূন্য কঙ্কালের ন্যায়, দিবাকর-হীন সৌরজগতের ন্যায়, রাহুগ্ৰস্ত নিশাকরের ন্যায়, প্রতিমাশূন্য দশমীর মণ্ডপের ন্যায়, অপ্ৰবুদ্ধপ্ৰত্যয় দেশের ন্যায় থাকিয়া না থাকার মত হইলেন, তাহার বাচিয়া থাকিতে ইচ্ছা রহিল না। পরীক্ষণেই, যে পাষাগুদিগের অত্যাচারে তিনি প্ৰেম প্ৰতিমাকে অকালে বিসর্জন দিতে বাধ্য হইলেন তাহদের রক্তে বসুন্ধরা রঞ্জিত করিতে সঙ্কল্প করিলেন। প্রতিহিংসায় তাহার প্রত্যেক শোণিতবিন্দু উত্তপ্ত হইয়া উঠিল। সেই সঙ্গে হৃদয়ে দুস্কৃতদালনের তীব্র বাসনা জাগিয়া উঠিল। মার মূৰ্ত্তি আবার তাহার মনোমধ্যে সপ্ৰকাশ হইল। যে চকুমকির পাথর ঘর্ষণের অপেক্ষায় ছিল তাহা জ্বলিয়া উঠিল, অরণির অগ্নির অব্যক্তস্বরূপ ব্যক্ত হইল, অনলগৰ্ভ গিবির গর্ভস্থ অগ্নি বাহির হইয়া পড়িল। চারিদিকে সুচীভেদ্য অন্ধকার, তাহার মধ্যে একটি বিদ্যুতের জন্ম হইল, কালধৰ্ম্মে একটি ধূমকেতুর, একটি উল্কাপিণ্ডের সৃষ্টি হইল, সাত্ত্বিক পণ্ডিত বেণীমাধবের রাজসিক স্বরূপ বিকশিত হইল । ইহাতে বৈচিত্ৰ্য কি ? জগৎ নিত্যপরিবর্তনশীল। পরিবর্তনই তাহার ধৰ্ম্ম । মানুষের জীবনও সেইরূপ । আজ যেখানে সুপ্তি, কাল সেখানে জাগরণ ; আজি যেখানে শান্তি, কাল সেখানে চাঞ্চল্য ; আজ যেখানে বীণার তান, কাল সেখানে তুন্দুভিনিনাদ ; আজ যাহারা নিৰ্বিরোধী, কাল তাহারা দুৰ্দ্ধৰ্য। পাঠানদিগের রাজত্বের শেষকালে যে সকল অত্যাচার উৎপীড়ন আরম্ভ হয় তাহার প্রতিকারকল্পে যে শক্তির উদ্ভব হয় তাহারই পূর্ণ পরিণতি বেণী রায়। br(፩