পাতা:বেদান্ত প্রবেশ.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Եր বেদান্ত প্রবেশ । ১০ । নিদ্রাবস্থায় যে নিশ্বাস প্রশ্বাস প্রবাহিত হয় তাহ যেমন স্বাভাবিক ও পুরুষবুদ্ধির অকৃত ; মানব, ঈশ্বরের আবির্ভাব ও বিভূতি, অগ্নিতে, জলেতে, বিশ্ব-ভুবনে ও নরপ্রকৃতিতে দৃষ্ট করিয়া অনুরাগ ও প্রেমবশে তত্তদবলম্বনে র্তাহার পূজার উদ্দেশে যে স্তুতিবন্দন উচ্চারণ করেন তাহাতেও তাহার সেইরূপ কিছুমাত্র কর্তৃত্ব থাকে না। তাদৃশ স্থলে র্তাহার হৃদয়ের স্বাভাবিক উত্তেজনাই ঐ প্রকার স্তুতিবন্দনার হেতু, এবং ব্রহ্মই তাহার লক্ষ্য। সেই সকল স্তুতিবন্দন৷ স্বতঃসিদ্ধ। বেদ তাদৃশ ঋছ সমূহের সংহিতা মাত্রট তরাং বেদ ও স্বতঃসিদ্ধ। মহর্ষি কপিল কহিয়াছেন “নিজশক্ত্যভিব্যক্তেঃ স্বতঃ প্রামাণ্যং” (কপিলসূত্র ৫৫১) বেদ নিজ শক্তিতেই অভিব্যক্ত হইয়াছে এবং আপনিই আপনার প্রমাণ? ফলতঃ ঈশ্বরের পূজা কখন তর্ক বা বুদ্ধির ফল নহে। অতএব বেদকে মনুষ্যের কৃত বলা সঙ্গত হয় না। তবে মনুষ্যের নিত্যস্বভাবজ বলিতে পার। কিন্তু সেই নিত্যস্বভাবের নিয়ন্ত ঈশ্বরই । কিন্তু ঈশ্বরের তাদৃশ নিয়ন্তত্বে র্তাহার বুদ্ধির কৌশল নাহি, তাহাও তাহার স্বভাবসিদ্ধ। এই হেতু বেদকে নিত্য অথচ ঈশ্বর হইতে নিশ্বাস প্রশ্বাসবৎ উৎপন্ন বলিতে পার। এ স্থলে “নিত্য” শব্দের গৌণ প্রয়োগ বুঝিতে হইবে । এতাবত মীমাংসা এই যে পুরুষবুদ্ধির অকৃত বিধায় বেদ অপৌরুষেয়, মানবের নিত্য-স্বভাব-নিহিত বিধায় উহা নিত্য, এবং ঈশ্বর সেই স্বভাবের নিয়ন্ত বিধায় উহ। ঈশ্বর-প্রণীত, কি না নিশ্বাসবৎ তাহার শক্তি হইতে নির্গত। যত কাল মানবস্বভাব বর্তমান থাকিবে, ততকাল পরমেশ্বর হিরণ্যগর্ভরূপে তাহাতে অধিষ্ঠিত থাকিবেনই।