ন্যায়, বৈশেষিক । २१ ও জীবাত্মারা জগতের উপাদান কারণ। অর্থাৎ পরমাত্মা পরমাণুগুলির দ্বারা জড় পদার্থও জীবাত্মাগুলির দ্বারা মনুষ্যাদি স্বষ্টি করিয়াছেন। যত বার প্রলয় হইবে প্রলয়ান্তে তত বার উহারদের দ্বারা পরমেশ্বর জগৎ রচনা করিবেন । * উহার আপন হইতে এই সৰ্ব্বসামঞ্জসীভূত জগৎরূপে পরিণত হইতে পারে না। অতএব নিয়ন্তা রূপে ঈশ্বরও নিত্য ছিলেন। কিন্তু ঈশ্বর যেমন পরমাণুকে স্থল বিষয়ের উপাদান করিলেন, তদ্রুপ দুহাকে জীবের উপাদান করেন নাই। কারণ অচেতন চেতনের উপাদান হইতে পারে না। অতএব জীবও নিত্য ছিল ।ণ ঐ পরমাণু ও জীবাত্মাসমূহ এই জড় নৈয়ায়িকের মহাপ্রলয়ই স্বীকার করেন না ; যথা—প্রসিদ্ধ রঘুনাথ শিরোমণি সিদ্ধান্তলক্ষণে লিথিয়াছেন,“মহাপ্রলয়ে মানাভাবাৎ’ মহাপ্রলয়ের প্রমাণ নাই। স্বতরাং মহাপ্রলয়ে পরমাণু ও জীব নষ্ট হয় এক্সত আশঙ্কা পৰ্য্যস্ত থাকিতেছেন।
- এইরূপ স্বষ্টি যদি পূৰ্ণপাদস্বরূপ পরমাত্মাকর্তৃক রচিত জ্ঞান না করিয়া র্তাহার একপাদস্বরূপ ব্রহ্মা অথবা ঈশ্বর কৃত জ্ঞান করা যায় তবে পুরাণের, মনু ও বেদাস্তের সহিত প্রায় ঐক্য হয় । তাহাতে কেবল সৰ্গভেদ মাত্র থাকে। আমার স্বষ্টিগ্রন্থ দেখহ । বিশেষতঃ তাহার ৮৮ ক্রম ।
† রামানুজের বিশিষ্টাদ্বৈতবাদ দেখিলে জানিবে যে, তাহার সহিত ন্যায় শাস্ত্রের মত এ ক্ষেত্রে প্রায় এক। রামানুজ কহেন পরমেশ্বর নিত্যকাল হইতে চিদচিৎবিশিষ্ট ছিলেন। অর্থাৎ স্বষ্টির পূর্ব হইতে অব্যাকৃত জীব ও জড় বিশিষ্ট ছিলেন। প্রভেদ এই যে রামানুজ অব্যাকৃত জীব ও জড়ের সহিত পরমেশ্বরের বিশিষ্টতা স্বীকার করেন, কিন্তু ন্যায় দর্শন জীব পরমাণু ও পরমেশ্বরের নিত্য স্বাতন্ত্র্য প্রতিপাদন করিয়াছেন। এইরূপ উপাদান ও নিমিত্ত কারণের যে ন্যায়-প্রতিপাদিত নিত্যতা, তাহা কেবল নৈমিত্তক স্বষ্টি উপলক্ষে । (আমার স্বষ্টিগ্রন্থে ৮৮ ক্রমের শেষ টপ্পনী দেখ ) নতুবা পূৰ্ণব্ৰহ্ম হইতে অব্যাকৃত অবস্থায় জীব ও পরমাণুর স্বাতন্ত্র্য অসম্ভব। কেন না পরমেশ্বর পূর্ণব্ৰহ্মরূপে সৰ্ব্বব্যাপী । জীব ও পরমাণু ঐ সৰ্ব্বব্যাপীর অংশব্যাপী মাত্র হইতে পারে। তদ্ভিন্ন কোথা থাকিবেক ? - সুতরাং ব্ৰহ্মই জীব ও পরমাণু বিশিষ্ট ছিলেন। পুরাণেরও এই মত। অতএব উপাধিজন্য বাহতঃমত প্রভেদ থাকুক, প্রকৃত প্রস্তাবে এ সম্বন্ধে সকল শাস্ত্রেরই ঐক্য। বেদান্ত স্থত্রে ২ অঃ । ২ পা ও । ২। ৩ অধিকরণে পমাণুর ধ্রুব নিত্যতা খণ্ডন করিয়াছেন।
