পাতা:বেলা অবেলা কালবেলা - জীবনানন্দ দাশ.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রোদের ভিতরে যেন সমুদ্রের পারে পাখিদের বিষণ্ণ শক্তির মতো আয়োজনে নির্মিত হতেছে ; কোলাহলে— কেমন নিশিত উৎসবে গড়ে ওঠে । একদিন শূন্ততায় স্তব্ধতায় ফিরে দেখি তারা কেউ তার নেই। পিতৃপুরুষেরা সব নিজ স্বার্থ ছেড়ে দিয়ে অতীতের দিকে । স’রে যায়,—পুরোনো গাছের সাথে সহমর্ম জিনিসের মতো হেমস্তের রৌদ্রে-দিনে-অন্ধকারে শেষবার দাড়ায়ে তবুও কখনো শীতের রাতে যখন বেড়েছে খুব শীত দেখেছি পিপুল গাছ আর পিতাদের ঢেউ আর সব জিনিস : অতীত । তারপর ঢের দিন ক’লে গেলে আবার জীবনোৎসব যেনমত্ততার চেয়ে ঢের মহাসান, অনেক করুণ । তবুও আবার মৃত্যু —তারপর একদিন মউমাছিদের অনুরণনের বলে রৌদ্র বিচ্ছুরিত হয়ে গেলে নীল আকাশ নিজের কণ্ঠে কেমন নি:স্থত হয়ে ওঠে ;–হেমস্তের অপরাহ্লে পৃথিবী মাঠের দিকে সহসা তাকালে কোথাও শনের বনে—হলুদ রঙের খড়ে-চাষার আঙলে গালে—কেমন নিমীল সোনা পশ্চিমের অদৃশ্ব সূর্যেব থেকে চুপে নেমে আসে ; প্রকৃতি ও পাখির শরীর ছুঁয়ে মৃতোপম মানুষের হাড়ে কি যেন কিসের সৌরব্যবহারে এসে লেগে থাকে। অথবা কখনো সূর্য—মনে পড়ে–অবহিত হয়ে নীলিমার মাঝপথে এসে থেমে রয়ে গেছে—বড় গোল—রাহুর আতাস নেই—এমনই পবিত্র নিরুদ্বেল । এই সব বিকেলের হেমন্তের সূর্যছবি—তবু দেখাবার মতে আজ কোনো দিকে কেউ নেই আর, অনেকেই মাটির শয়ানে ফুরাতেছে ।