পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ

বাঙ্গালায় আসিলেন, কিন্তু উহা তাঁহার ভাল লাগিল না। তিনি অল্পকাল মধ্যেই তরবারি পরিত্যাগ করিয়া পর্য্যটক হইলেন এবং ভারতবর্ষ-ভ্রমণে বাহির হইলেন। তাঁহার পর্য্যটন-স্পৃহা এতই প্রবলা ছিল যে, একদিন প্রভাতে উঠিয়া কলিকাতা হইতে পদব্রজে সুরাট যাত্রা করিলেন এবং ক্রমে ক্রমে অষ্ট্রেলিয়া, রুষিয়া ও আমেরিকা পরিভ্রমণ করিয়া আসিলেন। কিছুতেই তাঁহার ক্লেশ হইত না । অল্পাহারে বা অনাহারে তিনি কষ্টানুভব করিতেন না। নিদ্রাদেবী তাঁহার দাসী হইয়াছিল। সময়ে হউক অসময়ে হউক, সুবিধায় হউক অসুবিধায় হউক—সঙ্কীর্ণ স্থানে হউক কিংবা প্রশস্ত স্থানে হউক, যখন যতটুকু আবশ্যক তিনি ততটুকু নিদ্রা যাইতে পারিতেন।

 ফার্গুসন্ কোনো সমিতির সদস্য ছিলেন না বটে, কিন্তু “ডেইলি টেলিগ্রাফ” নামক সুবিখ্যাত সংবাদপত্রে সর্ব্বদাই তাঁহার কৌতূহলপূর্ণ ভ্রমণকাহিনী লিখিতেন বলিয়া সকলের নিকট সুপরিচিত ছিলেন। তিনি কোনো সভা-সমিতির সহিত যোগদান করিতেন না। ভাবিতেন যতক্ষণ সভায় বসিয়া বৃথা তর্ক বিতর্ক করিব, ততক্ষণ কোনো একটা তথ্য আবিষ্কারের চেষ্টা করিলে কাজ হইবে। পর্য্যটক ফার্গুসন্ যাহা দেখিতেন, তাহার অন্তস্তল পর্য্যন্ত না দেখিয়া ছাড়িতেন না। তিনি অদৃষ্টলিপির উপর আস্থাবান্ ছিলেন। এবং সর্ব্বদাই বলিতেন, ‘দেশভ্রমণ আমার কপালের লেখা—সে লেখা মুছিয়া দিবার সাধ্য কাহারো নাই।'