পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ


ছিলেন যে, বন্ধুর পর্য্যটন-স্পৃহা বোধ হয় শেষ হ‍ইয়াছে। তিনি মনে মনে তুণ্টই হইয়াছিলেন। সাক্ষাৎ ঘটিলেই কেনেডি তাঁহার বন্ধুকে বলিতেন “আর ছুটা-ছুটি করে কাজ নাই, বিজ্ঞানের জন্য অনেক করেছ—এখন দু’দিন ঘর-সংসারে মন দাও।” ফার্গুসন্‌ সর্ব্বদাই চিন্তাযুক্ত থাকিতেন, বন্ধুর কথায় কোনো উত্তর দিতেন না।

 জানুয়ারি মাসে ফার্গুসনের সহিত সাক্ষাৎ হইবার পর কেনেডি বিশেষ ভাবে তাঁহার ভাবান্তর লক্ষ্য করিলেন এবং ফার্গুসন্কে‌ বিদায় দিয়া ভাবিতে লাগিলেন,ফার্গুসনের কি হয়েছে? তাকে অত চিন্তাযুক্ত দেখছি কেন? ব্যাপার কি? অকস্মাৎ এক দিন এক খণ্ড ‘ডেইলি টেলিগ্রাফ’ হস্তগত হওয়ায় কেনেডির আর কিছু বুঝিতে বাকী রহিল না। তিনি টেবিলে সজোরে করাঘাত করিয়া বলিয়া উঠিলেন—

 “দেখেছ, কি পাগল! কি বোকা! বেলুনে চড়ে' আফ্রিকা ভ্রমণ করতে চায়। দু’বচ্ছর ধরে’ ফার্গুসন বুঝি এই চিন্তাতেই নিযুক্ত আছে!” নিকটেই কেনেডির ভৃত্য ছিল। সে কহিল, “ও কিছু নয়—নিশ্চয়ই সব ফাঁকি!”

 “তুমি বলছো ফাঁকি! কখনো ফাঁকি নয়। আমি কি আর তাঁকে চিনি না? এমন একটা অসম্ভব প্রস্তার ঠিক তাঁরই উপযুক্ত। দেখছ, আকাশে উড়ে’ বেড়াতে চায়! উঃ কি দুরাকাঙ্ক্ষা! কি দাম্ভিকতা! ঈগল পাখীকেও পরাস্ত, করতে চায়! যাতে তার না যাওয়া হয়, তাই করতে হবে।