পাতা:বৈকুণ্ঠের খাতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় দৃশ্য ৷
৪৭

দিন টিঁকে আছি তবু ধর্ম্ম বলে একটা কিছু আছে। দেখ কেদার দা, আমি যখন হাঁসপাতালে পড়েছিলুম, বুড়োর কথা আমার সর্ব্বদা মনে হত— পড়ে পড়ে ভাবতুম, তিনকড়ি নেই এখন কেদারদার হাত থেকে বুড়োকে কে ঠেকাবে! বড় দুঃখ হত।

 কেদার। দেখ্ তিনকড়ে তুই যদি এখানে আমাকে জ্বালাতে আসিস্ তা হলে—

 তিনকড়ি। মিথ্যে ভয় করচ দাদা! আমাকে আর হাঁসপাতালে পাঠাতে হবে না। এখানে তুমি একলাই রাজত্ব করবে। আমি দুদিনের বেশি কোথাও টিঁকতে পারিনে, এ জায়গাও আমার সহ্য হবে না।

 কেদার। তাহলে আর আমাকে দগ্ধাস্ কেন— না হয় দুটো দিন আগেই গেলি।

 তিনকড়ি। বৈকুণ্ঠের খাতাখানা না চুকিয়ে যেতে পারচিনে—তুমি তাকে ফাঁকি দেবে জানি। অদৃষ্টে যা থাকে ওটা এই অভাগাকেই শুন্‌তে হবে।

 কেদার। এ ছোঁড়াটাকে মেরে ধরে গাল দিয়ে কিছুতেই তাড়াবার যো নেই।—তিনকড়ে তোর ক্ষিধে পেয়েছে?

 তিনকড়ি। কেন আর মনে করিয়ে দাও ভাই?

 কেদার। চল্‌ তোকে কিছু পয়সা দিই গে—বাজার থেকে জলখাবার কিনে এনে খাবি।