পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ΣΣ বৈকুণ্ঠের উইল কথাই জানি । আমি জানি, ওর হাতে তোমাদের সাপে দিয়ে। আমি নিৰ্ভয়ে দুচক্ষু বুজতে পারব। ভবানী নিজেও কিছুদিন হইতে লক্ষ্য করিতেছিলেন, তার স্বামীর স্বাস্থ্য যেন দিন দিন ভাঙিয়া পড়িতেছিল। তার শেষ কথায় একটা আসন্ন বিপদের বাৰ্ত্ত অনুভব করিয়া কঁাদিয়া ফেলিয়া বলিলেন, আচ্ছা, নিয়ে যাও ! বলিয়া নিজে গিয়া গোকুলকে ডাকিয়া আনিয়া স্বামীর হাতে সঁপিয়া দিলেন। তাহার মুখ চুম্বন করিয়া বলিলেন, ওঁর সঙ্গে দোকানে যাও বাবা ! তুমি মানুষ হলেই তবে আমরা দাড়াতে পারব। গোকুল পিতা-মাতার মুখের পানে চাহিয়া বিস্মিত হইল। সে বেচার কাল রাত্রেই বিছানায় শুইয়া মনে মনে প্ৰতিজ্ঞ করিয়াছিল, এ বৎসর। যেমন করিয়া হোক উত্তীর্ণ হইবেই। ইস্কুল ছাড়িয়া দোকান যাইতে কোন ছেলেই গৌরব বোধ করে না ; কিন্তু কোন দিনই সে মায়ের অবাধ্য নহে। সহপাঠীদের বিদ্রুপের খোচা তাহার মনে বাজিতে লাগিল, কিন্তু সে কোন আপত্তি করিল না, নিঃশব্দে পিতার অনুসরণ করিল। val দশ বৎসর অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে, জরাগ্রস্ত বৈকুণ্ঠ নিজেও মরিতে বসিয়াছে। কিন্তু গোকুলের সম্বন্ধে সে ভুল করে নাই, তাহা তাহার বাড়িটার পানে চাহিলেই বুঝা যায়। গঞ্জের ভিতর সে মুন্দির দোকান আর নাই। তাহার পরিবর্তে প্ৰকাণ্ড গোলদারী দােকান। সেখানে লাখো টাকার কারবার চলিতেছে।