পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Se বৈকুণ্ঠের উইল বৈকুণ্ঠ কহিলেন, আমি মরতেও পারাচি নে ছোটবীে, আমার অবর্তমানে আমার এত কষ্টের দোকানটি বিনোদ হাতে পেয়ে দুদিনে নষ্ট ক’রে ফেলবে। এ শোক আমি পরকালে বসেও সহ্য করতে পারব না-সেখানেও আমার বুকে শেল বাজবে। একটুখানি থামিয়া কহিলেন, শুধু কি তাই ? তোমার দাড়াবার স্থান থাকবে না-আমার গোকুলকেও হয় ত ছেলেমেয়ে নিয়ে পথে বসতে হবে, বলিতে বলিতেই বৈকুণ্ঠ ভয়ে কঁপিয়া উঠিলেন। এরূপ দুৰ্ঘটনার কল্পনামাত্রেই তঁহার বক্ষস্পন্দন থামিয়া যাইবার উপক্ৰম করিল। ভবানী তাড়াতাড়ি স্বামীর মুখের উপর মুখ আনিয়া কঁাদিয়া কহিলেন, ওগো, বিনোদকে তুমি কিছুই দিয়ে যেও না। তোমার গায়ের রক্ত জল-করা জিনিস। আমি কারুকে দেব না। দোকান, ঘর, বাড়ি, বিষয়-সম্পত্তি সমস্ত তুমি গোকুলকে লিখে দিয়ে যাও। তুমি শান্ত হও-নিশ্চিন্ত হও-আমি নিজে তার সাক্ষী হয়ে থাকব। বৈকুণ্ঠ কিছুক্ষণ স্ত্রীর মুখপানে চাহিয়া থাকিয়া একটা নিশ্বাস ফেলিয়া কহিলেন, কেবল এই কথাই আমি দিবারাত্রি ভাবছি ছোটবেী, আমি ভগবানকে পৰ্য্যন্ত মন দিয়ে ডাকতে পারুচি নে ! কিন্তু তুমি কি এতে মত দিতে পারবে ? বলিয়া বৈকুণ্ঠ হতাশভাবে আর একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ত্যাগ করিলেন। ভবানীর বুক ফাটিয়া গেল। তিনি মরণোন্মুখ স্বামীর বুকের উপর ঝুকিয়া পড়িয়া অশ্রুজড়িতকণ্ঠে কহিলেন, ওগো, আমি মত দিতে পারব। তোমাকে ছুয়ে বলচি পারব। আমি