পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 ዓ বৈকুণ্ঠের উইল বাপ-মায়ের শেষ কাজ করতেও বাড়ি আসে না, তার সঙ্গে আমাদেরও কোন সম্পর্ক নেই। গোকুল এ অভিযোগের যে কি জবাব দিবে, তাহা ভাবিয়া না পাইয়া, চুপ করিয়া রহিল। কিন্তু জবাব দিল তাহার স্ত্রী। সে দ্বারের আড়ালে বসিয়া সমস্ত আলোচনাই শুনিতেছিল। সেইখান হইতে বেশ স্পষ্ট গলায় কহিল, ঠাকুর কি না বুঝেই এমন একটা কাজ করে গেলেন ? তিনি ছিলেন অন্তৰ্যামী। তিন-চারদিন ধরে কলকাতার বাসায় ঠাকুরপোকে যখন খুজে পাওয়া গেল না, তখনই ত তিনি তঁর গুণগান সব ধরে ফেললেন। তার বিষয় তিনি যদি সমস্ত দিয়ে যান, তাতে আমাদের কেউ ত আর দোষ দিতে পারবে না। তুমি যাই, তাই ভাই ভাই কর, আর কেউ হ’লে— টানটা অসমাপ্তই রহিল। আর কেহ কি করিত তাহা খুলিয়া বলা এক্ষেত্রে বড়বে বাহুল্য মনে করিল। কিন্তু ভবানী মনে মনে ভয়ানক আশ্চৰ্য্য হইয়া গেলেন। কারণ ইতিপূর্বে শ্বশুর। বৰ্ত্তমানে বড়বে। এরূপ কথা কোন দিন বলে নাই ; এমন কি শাশুড়ীর সামনে স্বামীকে লক্ষ্য করিয়া সে কথাই কহে নাই। এই কয়দিনেই তাহার এতখানি উন্নতিতে তিনি নির্বাক হইয়া রহিলেন । গোকুলও প্রথমটা কেমন-যেন হতবুদ্ধি হইয়া গেল। কিন্তু পরীক্ষণেই উন্মুক্ত দরজার দিকে ডান হাত প্রসারিত করিয়া ভবানীর মুখের পানে চাহিয়া একেবারে ক্ষ্যাপার মত চেচাইয়া উঠিল, শোন মা, শোন। ছোটলোকের মেয়ের কথা শোন।