পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S বিনোদের বেশ একটি বন্ধুর দল জুটিয়াছিল, যাহারা প্ৰতিনিয়তই তাহাকে মকদ্দমায় উৎসাহিত করিতেছিল। কারণ হারিলে তাহদের ক্ষতি নাই-ক্তিতিলে পরম লাভ । অনেক দিনের, অনেক আমোদ-প্ৰমোদের খোরাক সংগ্ৰহ হয় । আবার মকদ্দমা যে করিতেই হইবে, তাহাও একপ্রকার নিশ্চিত অবধারিত হইয়াছিল। যে হেতু বিনোদের তরফ হইতে যে বন্ধুটি আপোষে মিটমাট করিবার প্রস্তাব লইয়া একদিন গোকুলের কাছে গিয়াছিল, গোকুল তাহাকে হাঁকাইয়া দিয়া বলিয়াছিল, বিয়াটে নচ্ছার পাজিকে এক সিকি পয়সার বিষয় দেব না-যা পারে সে করুক। কিন্তু এত বড় বিষয়ের জন্য মামলা রুজু করিতে একটু বেশি। টাকার আবশ্যক। সেইটুকুর জন্যই বিনোদের কালবিলম্ব হইয়া যাইতেছিল। দাদার উপর বিনোদের যত রাগই থাকুক, সেইদিন হইতেই কেমন যেন তাহার প্রাণটা কঁাদিয়া কঁাদিয়া উঠিতেছিল। অত লোকের সম্মুখে অপমানিত হইয়া যেমন করিয়া সে ছুটিয়া পলাইয়াছিল, তাহার মুখের সে আৰ্ত্তি ছবিটা সে কোন মতেই ভুলিতে পারিতেছিল না। বুকের ভিতরে কে যেন অনুক্ষণ বলিতেছিল-অন্যায়, অন্যায়, অত্যন্ত অন্যায় হইয়া গিয়াছে। অত্যন্ত মিথ্যা ও কুৎসিত অপবাদে অভিহিত করিয়া দাদাকে বিদায় করা হইয়াছে। সেই দাদা যে জীবনে আর কোন দিন এ পথ মাড়াইবে না, তাহ নিঃসংশয়ে বিনোদ বুঝিয়াছিল।