পাতা:বৈজ্ঞানিক-জীবনী (প্রথম ভাগ).djvu/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৫২ বৈজ্ঞানিক জীবনী উল্লিখিত প্রস্তুতপ্রণালীর সহিত নিলে। কিন্তু চক্রপানি লিথিয়াছেন “রসপপটিকা খ্যাত নিবদ্ধ চক্ৰপাণিনা।” এক্ষেত্রে আমরা চক্রপাণিকে কজলী ও রসপপটিকার আবিষ্কৰ্ত্ত না বলিয়৷ বৈষ্ঠকশাস্ত্রে উহাদের প্রচলয়িত বলিয়া স্বীকার করিতে পারি। রসরত্নাকরের মতে উহাদের আবিষ্কৰ্ত্ত ও প্রয়োগকর্তা নাগাৰ্জুন। ইহা ভিন্ন এই রসরত্নাকর গ্রন্থে বিবিধ খনিজ (or ) পদার্থ হইতে ধাতু প্রস্তুতবিধি ও পচিশ প্রকার যন্ত্রের (যথা ভূধর যন্ত্র, দোল যন্ত্র ইত্যাদি ) উল্লেখ আছে। ধাতুপ্রস্তুতবিধিগুলি নাগাৰ্জ্জুনের সময় প্রচলিত থাকাই সম্ভব কিন্তু যন্ত্রগুলি নাগাৰ্জুনের পরে প্রচলিত হইয়াছিল বলিয়া বোধ হয়। ফলকথা নাগাৰ্জুনের প্রণীত অন্তান্ত গ্রন্থের সম্যক আলোচনা না হইলে তাহার বৈজ্ঞানিক কাৰ্য্যাবলীর সঠিক সংবাদ প্রদান করা অসম্ভব। কিন্তু এটা ঠিক বলিয়া মনে হয় যে নাগাৰ্জ্জুন ধাতুর মারণ প্রক্রিয় ও হীনধাতুকে স্বর্ণে পরিণত করিবার প্রক্রিয় উদ্ভাবিত ও প্রচারিত করিয়া ভারতে প্রাচীন রসায়ণ শাস্ত্রের ভিত্তি স্থাপন করিয়া গিয়াছেন। তাহার সময়ের পর হইতে বিবিধ ধাতুর বিবিধ যৌগিক প্রস্তুত হইয়া ঔষধাৰ্থে ব্যবহৃত হইয়াছে এবং বিবিধ যন্ত্রাদিও উদ্ভাবিত হইয়াছে। তিনি ভারতে রসায়ন শাস্ত্রের যুগপ্রবর্তক। এই মহাপুরুষের বৈজ্ঞানিক ক্রিয়াবলীর সম্যক তথ্য যাহাতে অবগত হইতে পারা যায় তাহার চেষ্টা করিতে স্বধীবৃন্দকে বিনীতভাবে আহবান করিতেছি। আমরা গেবার, প্যারাসেল্সস, এভিসেন, এগ্রিকোলার সহিত পরিচিত কিন্তু ভারতের নাগাৰ্জুন, চক্রপাণি প্রভৃতি প্রাচীন রাসায়ণিকগণ আমাদের অপরিচিত—এ জাতীয় কলঙ্ক আর কতদিন থাকিবে ?