পাতা:বৈজ্ঞানিক-জীবনী (প্রথম ভাগ).djvu/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

** বৈজ্ঞানিক জীবনী বিনাশ হয় না। সকলেই দেখিয়াছেন একটি বাতি পুড়িতে পুড়িতে কমিয়া যায়, মৃতদেহ শ্মশানে ধুধু করিয়া জলিয়া কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ছাই হইয়া যায়। জিজ্ঞাস্ত এই যে, বাস্তবিক কি বৰ্ত্তিক বা মৃতদেহের বিনাশ সাধিত হইল ? দেখিতে পাই, সর্ষপপ্রমাণ ক্ষুদ্র বীজ হইতে ক্রমে বৃহৎ বটবৃক্ষের উৎপত্তি হয়। জিজ্ঞাস্ত এই যে, নূতন বস্তুর স্বষ্টি হইল কি ? বাস্তবিক তাহ নহে। রাসায়নিক পরীক্ষা দ্বারা স্থির হক্টয়াছে যে বাতি জলিয়৷ বায়ুর অন্নজানের সহিত সংযুক্ত হইয়া জল ও কাৰ্ব্বনিক এসিড গ্যাস উৎপন্ন করে এবং এই দুই পদার্থ সংগ্ৰহ করিয়া ওজন করিয়া দেখাইয়াছেন যে ইহাদের মিলিত ওজন বাতির ওজন অপেক্ষা কমত নহেই বরং বেশী। বেশী হইবার কারণ— ংযুক্ত অম্লজানের ওজন। সেইরূপ মৃতদেহ দগ্ধ হইয়া খানিকটা অংশ ভষ্মে পরিণত হয়, খানিকটা অংশ জলীয় বাষ্প ও গ্যাসে পরিণত হয়। বীজ হইতে যখন স্ববৃহৎ বৃক্ষ উৎপন্ন হয় তখন নুতন বস্তুর স্বষ্টি হয় না। কোন অজানিত শক্তির বলে বীজ চারিদিক হইতে গ্যাস, জল, সার, বায়ু প্রভৃতি গ্রহণ করিয়া বৃক্ষে পরিণত হয়। যদি এই তাবৎ জল, সার প্রভৃতি ওজন করা যাইত তাহা হইলে দেখা যাইত যে তাহাদের মিলিত ওজন বৃক্ষের সমান। বাস্তবিক জগতে যদি রাসায়নিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সঙ্গে নুতন বস্তুর স্বজন বা বিনাশ হইত, তাহা হইলে এতদিনে বস্তুর আধিক্যে বা অল্পতাপ্রযুক্ত জগতের নাশ হইয়া যাইত। বস্তুর অবিনশ্বরত্বের উপর সমগ্র রসায়ন শাস্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত। ল্যাভোয়াসিয়ে এই ভিত্তিকে পরিমাণাত্মক সত্যে পরিণত করিয়া রাসায়ন শাস্ত্রকে পরিমাণাত্মক শাস্ত্রে পরিণত করিয়া গিয়াছেন ।