পাতা:বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্ব - অক্ষয়কুমার চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্ব ৮

আকাশে বিজলী রূপে প্রকাশ পাইয়া সৌধ-চুড়ায় বজ্র রূপে পতিত হইতে পারে, কখনও বা মাতৃ-হৃদয়ে অপত্য- স্নেহ রূপে প্রকাশিত হইয়া ক্রোড়স্থ শিশুকে স্তন্য পান করায়। এই শক্তি কি এবং কোথা হইতে আসিল তাহা আমরা জানি না এবং পদার্থবিজ্ঞান অদ্যাপি তাহার কোন উত্তর দিতে পারেন নাই।
এইবার আমি জীবদেহের উৎপত্তির বিষয় বলিব। যাহার প্রাণ আছে তাহাকে চেতন পদার্থ বলা যায়। আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণের মতে অচেতন পদার্থ হইতেই চেতন পদার্থের উৎপত্তি। ইহা মানিয়া লইলে সজীব ও নিজ্জীব পদার্থের কোথায় পার্থক্য তাহা নির্দেশ করা যায় না। গতিশক্তি ও পােষণ ক্রিয়া (movement and growth) যদি সজীবের লক্ষণ বলিয়া ধরা যায়, তাহা হইলে আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণ পরীক্ষা দ্বারা জানিয়াছেন যে, কোন কোন নির্জীব পদার্থেও অবস্থা বিশেষে উহা লক্ষিত হইয়া থাকে। প্রসিদ্ধ বৈজ্ঞানিক লিউডক (Ludock) এবং লােয়েব (Loob) নির্জীব পদার্থের উপর রাসায়নিক ও জড় শক্তির ক্রিয়া প্রয়োগ দ্বারা ঠিক সজীব পদার্থ উৎপন্ন করিতে না পারিলেও সজীব পদার্থের কোনও কোনও লক্ষণ তাহাতে লক্ষ্য করিয়াছিলেন। যে প্রকার ক্রমবিকাশ (evolution) প্রক্রিয়া দ্বারা পৃথিবীস্থ নির্জীব পদার্থ সকলের উৎপত্তি হইয়াছে, তাহা আমরা পূৰ্বে বলিয়াছি। সেই প্রকার ক্রমবিকাশ দ্বারা নির্জীব পদার্থ হইতে প্রথমে অতি সূক্ষ্ম জীবাণুসকলের উৎপত্তি হইয়াছিল, ইহা সম্ভবপর বলিয়া বােধ হয়। পৃথিবীস্থ যাবতীয় পদার্থ অনবরত পরিবর্তনশীল। পুরাতনের উপাদান লইয়া নূতন পদার্থের উৎপত্তি হইতেছে। এই নিয়মের বশবর্তী হইয়া নির্জীব পদার্থ রাসায়নিক প্রক্রিয়া দ্বারা পরিবর্তিত হইয়া পৃথিবীর পূৰ্ব্ববর্তী কোন এক অবস্থায় সজীব পদার্থে পরিণত হইয়াছে এরূপ অনুমান করা যায়। যৎ কালে