পাতা:বৈজ্ঞানিক হিন্দুধর্ম্ম প্রথম ভাগ.djvu/২১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ २०० ] আয়ুষ্কর ও অশেষ রোগনাশক স্রোতের জলের অবগাহনে লোকবর্গকে প্রোৎ সাহিত করিবার জন্তই কি গঙ্গাস্নানে এত পুণ্য নির্দিষ্ট হইয়াছে ? ক্ষণবিধ্বংসি শরীরের সামান্ত উপকারের জন্তই কি গঙ্গামাতা আমাদের পতিতপাবনী ? গোহত্যায় সমাজের প্রভূত অমঙ্গল সম্পাদিত হয় বলিয়াই কি উহাতে এত মহাপাতক নির্দিষ্ট হইয়াছে ? সমাজের সামান্ত উপকারের জন্ত কি গাভী আমাদের পূজনীয়া মা ভগবতী ? ধৰ্ম্মজগতের নিয়ম এই যে, যাহার যাহাতে অটল বিশ্বাস, তিনি তাহ সম্পাদন করিয়া জীবাত্মাকে পাপপুণ্যের ভাগী করেন এবং মনে আত্মপ্রসাদ বা আত্মগ্লানি প্রাপ্ত হন । অতএব গঙ্গাস্নান করিয়া ধৰ্ম্মাত্মা হিন্দু অশেষ পুণ্যলাভ করেন এবং গোহত্যা করিয়া বা দর্শন করিয়া নিরয়গামী হন। আর একজন মুসলমান গঙ্গাস্নান করিয়া কিছুই ফল পায় না এবং গোহত্যা করিয়া নিরয়গামী হয় না। কিন্তু সে ব্যক্তি শুকরমাংস স্পর্শ করিয়া নিরয়গামী হয় । যাহা হউক, হিন্দুধৰ্ম্ম আমাদের নিকট যেরূপ পাপপুণা নির্দেশ করে, তাহাই আমাদের নিকট সৰ্ব্বতোভাবে পালনীয়। এখন জিজ্ঞাস্ত, শাস্ত্র ও বিবেক এতদুভয়ের মধ্যে কাহার অtদেশ পালন করা কর্তব্য ? সুশিক্ষিত নব্য সম্প্রদায় বলেন, এ জগতে বিবেক সাক্ষাং সম্বন্ধে ঈশ্বরের প্রতিনিধি এবং ইহারই হাদেশ সৰ্ব্বতোভাবে পালনীয় । যিনি বিবেকের অনভিমতে কৰ্ম্ম করেন, তিনি ঈশ্বরের নিকট প্রকৃত দোষী হন । যে কোন অসৎ কৰ্ম্ম কর না কেন, যখন তুমি সেই কৰ্ম্ম করিয়া নিজ বিবেকের নিকট অপরাধী হও, তখনই তুমি ঈশ্বরের নিকট অপরাধী হইয়া যথার্থ পাপপঙ্কে লিপ্ত হও । অতএব বিবেকাঁদেশই একমাত্র পালনীয়। দেখা যায়, যে সমাজে এক প্রকার ধৰ্ম্মশাস্ত্র প্রচলিত, তথায় শাস্ত্র ও বিবেকের মধ্যে কোমরূপ বিরোধ নাই, কারণ একই শাস্ত্র সমাজস্থ যাবতীয় লোকের বিবেক গঠিত করে। ইহারই জন্ত মুসলমান ও খ্ৰীষ্টধৰ্ম্ম জগতে প্রচারিত হইবার পর, উহারা পূৰ্ব্বতন ধৰ্ম্মগ্রন্থসমূহ দগ্ধ করতঃ নিজ নিজ শাস্ত্র প্রচার করে। যে সমাজে ভিন্ন মতাবলম্বী ভিন্ন ভিন্ন শাস্ত্র প্রচলিত, তথায় শাস্ত্রবিশেষ ও বিবেকের মধ্যে বিরোধ উপস্থিত হয় এবং সমাজস্থ লোকের বিবেক শিক্ষামু' बाबी ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করে । এমন স্থলে যে শাস্ত্রপাঠে যে ধৰ্ম্ম তোমার বিবেক সম্মত, তুমি তাহাই গ্রহণ করিয়া আপনার ধৰ্ম্মপিপাসা চরিতার্থ কর।