পাতা:বৈষ্ণবদিগের সাধনা - ক্ষীরোদবিহারী গোস্বামী.pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩০ ঐনিত্যানন্দ-বংশাবলী। আমার অজ্ঞাত এরূপ ভক্ত কে আছে ? তিনি ‘বারশত নেড়াদিগকে । রামাইকে নিগ্ৰহ করিবার উপদেশ দিয়া পাঠাইলেন। নেড়াগণ হুঙ্কারে বাগনাপাড়ার লোক সকলকে সন্ত্রস্ত করিয়া দুই প্রহর নিশীথে রামাইয়ের ‘দ্বারে উপস্থিত হইয়া প্ৰসাদ প্রার্থনা করিল। রামাই তাহাদিগকে ভক্তি সহকারে আতিথ্য গ্রহণে অনুরোধ করিলেন। কিন্তু নেড়াগণ বলিল, আমরা যদি কঁচা আমি সহকারে ইলিস মৎস্যের বোল পাই তবে আহার করিব, নচেৎ চলিলাম। কিন্তু রামাই সেই অগ্রহায়ণ মাসে ইলিস মৎস্য কোথায়, আর কঁচা আম্রই বা কোথায় পাইবেন। এই চিন্তায় অস্থির হইয়া রামাই শ্ৰীরামকৃষ্ণের নিকট । অশ্রুবর্ষণ করিতে লাগিলেন। রামাই নিশ্চেষ্ট নির্বাক। কিছুক্ষণ এই অবস্থায় কাটিয়া গেল ; পরে হাস্যমুখে দেবালয় হইতে বহির্গত হইয়া নদীতীরে প্রার্থনামাত্র বিস্তুর মৎস্য হস্তগত হইল। আক্রমবৃক্ষের নিকট প্রয়োজন মত রসাল প্রাপ্ত হইয়া নৃত্য করিতে করিতে আবাস বাটীতে প্ৰবেশ করিলেন। পাকাদি কাৰ্য্য সমাধা করিয়া নেড়াদিগকে পরিতৃপ্ত করিলেন। নেড়াগণ যখন আহার করিতে আরম্ভ করে তখন তাহারা বীরবলাই শব্দে হুঙ্কার করিয়াছিল । সেই সন্দেহে রামাই তাঁহাদের পরিচয় ও আগমনের কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন। নেড়া সম্প্রদায় বলিল আমরা প্ৰভু বীরচন্দ্রের প্রেরিত ও ভৃত্য। আপনাকে পরীক্ষা করিবার জন্য আমরা আদিষ্ট হইয়াছিলাম। এই কথা শুনিবা মাত্ৰ শ্ৰীজাহ্নবার নাম করিয়া রামাই বালকের ন্যায় ক্ৰন্দন করিতে লাগিলেন, এবং একখানি পত্র নেড়াদিগের দ্বারা বীরচন্দ্রের নিকট পাঠাইলেন। বীরচন্দ্ৰ নেড়া সম্প্রদায়ের মুখে আনুপূর্বিক শ্রবণ করিয়া চমৎকৃত হইলেন, এবং পত্ৰ পাঠে অবগত হইয়া বাগনাপাড়ায় ভ্রাতার সহিত সাক্ষাৎ করিয়া উভয়ে মিলিত হইলেন। এক্ষণে শচীনন্দনের বংশই রামাইয়ের ধারা রক্ষা করিতেছে। রামাই সমাপ্ত।