পাতা:বৈষ্ণবাচার্য্য শ্রীমধ্ব.djvu/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈষ্ণবাচার্য্য মধব প্রাকৃত ও কৃষ্ণ-বহিষ্ণুৰ্থ ভোগিসম্প্রদায়ের ভোগোখ-ধারণাপুষ্ট, তাহা আমরা শ্ৰীবাস্থদেবের আচরণে প্রমাণিত দেখিতে পাই । আব্রহ্মস্তম্ব— কৃষ্ণবহির্মুখ ; জীবমাত্রেই নিজে হরিভজনহীন এবং মাৎসর্য ও ভোগবুদ্ধিনিবন্ধন পরের হরিভজনের বিরোধী। জগতে মাতা-পুত্রে, পিতা-পুত্রে, স্বামী-স্ত্রীতে, ভ্রাতা-ভ্ৰাতায়, স্বজন-স্বজনে, বন্ধু-বন্ধুতে পরস্পর ভোগৰুদ্ধি প্রচ্ছন্ন ও অপ্রচ্ছন্নরূপে অবিচ্ছিন্ন স্রোতধারার দ্যায় সৰ্ব্বদা প্রবাহিত । সুতরাং যখনই ইহাদের মধ্যে কেহ হরিভজনের জন্য অগ্রসর হইবার প্রয়াস দেখান, তখনই তন্মধ্য হইতে আর একজন তাহার ভোগ্য ( ? ) বস্তু চিরকালের তরে ভগবানের ভোগে উৎসর্গীকৃত হইবে ভাবিয়া, তাহার মুখের গ্রাস অপরে কাড়িয়া লইতেছে মনে করিয়া হরি ভজনোমুখ ব্যক্তিকে যে হরিভজনে বাধা প্রদান করিবে, ইহা অতি স্বাভাবিক । মাতা-পিতা ভক্ত অভিমান করেন, পুত্রের ভগবদ্ভজনে বিঘ্নকারী নহেন বলিয়া পুত্রের নিকট প্রতিজ্ঞাপত্ৰ’ প্রদান করিয়া থাকেন ততক্ষণ, যতক্ষণ না তাহারা তাহদের পুত্রকে নিজের অধীনে রাখিয়া—নিজের সেবায় নিযুক্ত করিয়া পুত্রকে ভোগ করিয়া লইতে পারেন । কিন্তু যখন বুঝিতে পারেন যে, পুত্র আর তাহাদের কল্পিত ভোগের বস্তু না হইয়া কৃষ্ণের ভোগ্য, কৃষ্ণের নৈবেদ্য—কৃষ্ণসেবার উন্মুক্ত উপকরণ হুইবার জন্য অগ্রসর হইতেছে, তখন তাহারা সেইরূপ পুত্রের হরিভজনে বাধা প্রদান করিবার জন্ত স্বর্গমর্ত্য আলোড়ন করিতে ও পশ্চাৎপদ হন না। ইহা যে কেবল পুত্রের প্রতি মাতা-পিতার ব্যবহারে লক্ষিত হয়, তাহা নহে, যেখানে পুত্র নিজের স্বরূপ বিস্মৃত হইয়া আপনাকে কাহারও পুত্র বলিয়া অভিমান করেন, সেখানে পুত্রও সেইরূপ হরিভজনোমুখ মাতা-পিতার হরিভজনে বাধা প্রদান করিবার জন্ত ©. [ ৯২ ]