৸৴৹
[তখন] নিকটে জিনপুর [দেখিতে পাইলেন]। প্রথমে বড়িয়াসকলকে (প্রকৃতির বহুবিধ দোষাভিব্যক্তিকে) কাটিয়া মারিলাম। গজবর (চিত্তগজেন্দ্র) দ্বারা পাঁচ জনকে (পঞ্চস্কন্ধাত্মক পঞ্চবিষয়গত অহঙ্কারাদিকে) কাটিয়া ঘায়েল করিলাম। মন্ত্রীর (প্রজ্ঞাপারমিতার অনুগামী বুদ্ধির) দ্বারা ঠাকুরকে (রাজা বা ক্লেশারোপিত চিত্তকে) পরিনির্ব্বৃত করা হইল। [রাজাকে এইরূপে] অবশ (অচল) করিয়া ভববল জিত হইল। কাহ্নু বলিতেছেন—আমি ভাল দান দিয়াছি এবং চৌষট্টি কোঠা (চৌষট্টি ঘর বা নির্ম্মাণচক্র) গুণিয়া নিয়াছি (তাহাতে চিত্ত স্থির করিয়া প্রকৃতির রূপ গ্রহণ করিয়াছি)।
১৩
রাগ কামোদ
কৃষ্ণাচার্য্যপাদানাম্— তিশরণ ণাবী কিঅ অঠকুমারী।
নিঅ দেহ করুণাশূণমে হেরী॥ ধ্রু॥
তরিত্তা ভবজলধি জিম করি মাঅ সুইনা।
মঝ বেণী তরঙ্গম মুনিআ॥ ধ্রু॥
পঞ্চ তথাগত কিঅ কেড়ুআল।
বাহঅ কাঅ কাহ্নি ল মাআজাল॥ ধ্রু॥
গন্ধ পরস রস জইসোঁ তইসোঁ।
নিংদ বিহুনে সুইনা জইসো॥ ধ্রু॥
চিঅকণ্ণহার সুণতমাঙ্গে।
চলিল কাহ্ন মহাসুহসাঙ্গে॥ ধ্রু॥
ত্রিশরণকে (তিন—কায়, বাক্, চিত্ত, ইহাদের যিনি আশ্রয়, সেই মহাসুখকায়কে) নৌকা করা হইল; (অতএব) নিজ দেহকে করুণা ও শূন্যে দর্শন করিয়া (অর্থাৎ নিজ দেহে শূন্যতা ও করুণার ঐক্যরূপ যুগনদ্ধ রূপ দেখিয়া) অষ্ট কুমারী (অষ্ট প্রকৃতির উপর আধিপত্যরূপ বুদ্ধৈশ্বর্য্যসুখ অনুভূত হইল)। [তখন] যেমন মায়াময় ও স্বপ্নসদৃশ [বস্তুতে কোনরূপ আস্থা থাকে না, সেই প্রকার] করিয়া (কৃষ্ণাচার্য্য) ভবজলধি উত্তীর্ণ হইয়া, (পরমানন্দরূপ) মধ্যবেণিতে (স্বাধিষ্ঠানচিত্তের) তরঙ্গ (উল্লোল সুখ) মননপূর্ব্বক (ভোগ করিতে লাগিলেন)। পঞ্চপ্রকার তথাগত-[শক্তিকে] বৈঠা করিয়া, ল কাহ্নি! [তুমি] কায়-(রূপ মহাসুখনৌকা) বাহিয়া, মায়াজাল [উত্তীর্ণ হও]। (বাহ্যে) গন্ধ, স্পর্শ, রস (ইত্যাদি বিষয়সকল) যেমন আছে, তেমন (থাকুক), (আমাদের) নিদ্রাবিহীন (এই জাগদ্রবস্থায়) যেমন স্বপ্ন, (ঐ সকল তেমনই বোধ হয়)। শূন্যতারূপ নৌকামার্গে চিত্তরূপ কর্ণধারকে (সমারোপিত করিয়া) কৃষ্ণাচার্য্য মহাসুখসঙ্গরূপ (চক্রদ্বীপে) চলিলেন।