পাতা:বৌদ্ধধর্ম - হরপ্রসাদ শাস্ত্রী.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৌদ্ধ ধৰ্ম্ম ১২৩
সঞ্চয় করিয়া রাখিতেন - তাও রাখিতেন শিংয়ে অর্থাৎ যাহার দাম নাই, কুড়াইয়া যথেষ্ঠ পাওয়া যায় । তখন তো আর Bone-Mill - এর এতো দরকার হয় নাই ! এই যে সামান্য কথা ইহা লইয়াই ঘোর দলাদলি উপস্থিত হইল । যাঁহারা কড়া ভিক্ষু, তাঁহারা বলিলেন ভিক্ষুর আবার সঞ্চয় ? তাহা হইলে আবার ভিক্ষু রহিল না, গৃহস্থ হইয়া গেল। যাঁহারা তত কড়া ভিক্ষু নন, তাহারা বলিলেন, একটু লুণ সঞ্চয় করিলাম তাতে বহিয়া গেল কি ? আমরা কি কিছুই সঞ্চয় করি না ! আমাদের পাত্ৰ আছে, চীবর আছে, শয়ন আসন এসব তো আমাদের থাকে, একটু লুণ থাকিলেই সৰ্ব্বনাশ হইয়া গেল? এই আপত্তির নাম সিঙ্গিলোন কপ্পো।
(২) কপ্পতি দ্বঙ্গুল কপ্পো :- বুদ্ধদেব নিয়ম করিয়া গিয়াছিলেন, বেলা ঠিক দুই প্ৰহরের পর কোন ভিক্ষু আহার করিতে পরিবে না। ১২টা বাজিবার পূর্বে সকলকেই আহার সারিয়া লইতে হইবে, ১২টা বাজিলে পর আর কেহই আহার করিতে পরিবে না । তাহার পর যদি খাইতে হয় তো জল ও ফলের রস খাইতে হইবে। কিন্তু ইহারা তো ভিক্ষু, ভিক্ষা করিয়া রান্না ভাত আনিয়া তো খাইতে হইবে? একালের মত তো আর স্কুল, কালেজ, আফিস ছিল না, যে ৯টার মধ্যে ভাত চাই ! সেকালের লোকে খাইত বেলায়, রাঁধিতও বেলায়। ভিক্ষুরা সেই বেলার রান্না ভিক্ষা করিয়া আনিয়া খাইত। দুপুরের আগে খাইতে হইবে। দুপুরের পর এক গ্ৰাসও খাইবার হুকুম নাই। সুতরাং অনেকের খাওয়া হইত না, অনেকের আধপেটা হইত ।তাই তারা মনে করিত, দুই প্ৰহরের সময় ছায়া যেরূপ থাকে, তাহা হইতে দুই আঙ্গুল ছায়া সরিয়া গেলেও খাওয়া যাইতে পারে। কিন্তু কড়া ভিক্ষুরা বলিলেন, সে কখন হতে পারে না। মহাপ্রভুর আজ্ঞা দু'প্ৰহরের পূর্বে খাইতে হইবে, সে আজ্ঞা কি আমরা লঙ্ঘন করিতে পারি। সুতরাং মতান্তর হইল, দলাদলির একটা কারণ হইল।
(৩) কপ্পতি গামান্তর কপ্পো :- ভিক্ষুরা একদিনে দুই গ্রামে যাইতে পরিবে না, একদিনে দুই গ্রামে নিয়ম ছিল । কোন কোন ভিক্ষু মনে করিতেন, যদি গ্রামান্তরে নিমন্ত্রণ হয়, আগে স্বগ্রামে ভিক্ষা কিছু