পাতা:বৌদ্ধধর্ম - হরপ্রসাদ শাস্ত্রী.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
বৌদ্ধ ধৰ্ম্ম

হাজার শ্লোকে, আর এক সংস্করণ দশহাজার শ্লোকে, এক সংস্করণ আটহাজার শ্লোকে, এক সংস্করণ সাতশত শ্লোকে, আর এক সংস্করণ সকলের চেয়ে ছোট, স্বল্পাক্ষরা—“স্বল্পাক্ষরা প্ৰজ্ঞাপারমিতা”, - উহার তিনটি পাতা মাত্র। প্ৰজ্ঞাপারমিতা আরম্ভ করিতে হইলে কতকটা গৌরচন্দ্ৰিকা চাই - শেষ করিতে গেলেও কতকটা আড়ম্বর চাই। এই সব বাহা আড়ম্বর ছাড়িয়া দিলে উহাতে একটিমাত্র কথা সার—“সকল জীবে করুণা কর”।
মহাযানের মৰ্ম্ম গীতায় একটি শ্লোকে প্ৰকাশ করিয়াছেন। সে শ্লোকটি অনেকেরই অভ্যাস আছে।
যো যো যাং যাং তনুং ভক্তঃ শ্রদ্ধয়ার্চিতুমিচ্ছতি ।
তস্য তাস্ত্যাচলাং শ্রদ্ধাং তামেব বিদধাম্যহং ।।
গীতায় এ কথাটি ভগবানের মুখে দেওয়া হইয়াছে, কিন্তু মহাযানে এই ভাবের কথা প্ৰত্যেক বোধিসত্ত্বের মুখে । বোধিসত্ত্বেরা নির্বাণের অভিলাষী, তাঁহারা মানুষ। ভগবানের মুখে যে কথা শোভা পায়, মানুষের মুখে সে কথা আরও অধিক শোভা পায়। ইহাতে বুঝা যায় তাহদের করুণা কত গভীর ।
মহাযান মতে তাহা হইলে জীবমাত্রেই বৌদ্ধ, কিন্তু এ কথায় ত কাজ চলে না। ভারতবর্ষে তখন নানারূপ ধৰ্ম্ম ছিল, মত ছিল, দর্শন ছিল, পন্হ ছিল, যান ছিল। মহাযান যেন বলিলেন, সকলেই বৌদ্ধ ; কিন্তু তাঁহাদের বিরুদ্ধবাদীরা সে কথা মানিবে কেন ? সুতরাং বৌদ্ধ কাহাকে বলে, এ বিচারের প্রয়োজন চিরদিন ছিল, এখনও আছে। ইহার মীমাংসা কি ? বৌদ্ধরা জাতি মানে না যে, ব্ৰাহ্মণাদির মত জন্মিবামাত্রই ব্ৰাহ্মণ হইবে বা ক্ষত্ৰিয় হইবে বা শূদ্র হইবে, বৈষ্ণব হইবে বা শৈব হইবে। একে ত বৌদ্ধগৃহস্থেরা বৌদ্ধ কিনা তাহাতেই সন্দেহ, তার পর তাহাদের ছেলে হইলে, সে ছেলে বৌদ্ধ হইবে কিনা তাহাতে আরও সন্দেহ। এখনও এ বিষয়ে কোন ইউরোপীয় বা এদেশীয় পণ্ডিতেরা কোন মীমাংসা করেন নাই, কিন্তু শুভাকর গুপ্তের আদিকৰ্ম্ম রচনা নামক বৌদ্ধদের স্মৃতিতে ইহার এক চুড়ান্ত নিম্পত্তি