পাতা:বৌদ্ধধর্ম - হরপ্রসাদ শাস্ত্রী.pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৌদ্ধ ধৰ্ম্ম 8 দিক আর না দিক, অন্যের ধান আমি তুলিয়া লইব । সে আপনার ধানগুলি সঞ্চয় করিয়া অপরের ক্ষেতের ধানগুলি উঠাইয়া লইয়া আসিল । তৃতীয় ব্যক্তি দেখিতে পাইয়া বলিল, “তুমি কর কি ? পরের ধান তাহাকে না বলিয়া তুলিয়া আনিতেছ?” “আর এরূপ করিব না।” কিন্তু আবার সে পরের ধান না বলিয়া তুলিয়া আনিল । তৃতীয় ব্যক্তি দেখিতে পাইয়া আবার বলিল, “তুমি ফের এই কাজ করিলে ?” সে বলিল, “আর এরূপ হইবে না।” কিন্তু কিছুদিন পরে সে আবার পরের ধান উঠাইয়া আনিল। তৃতীয় ব্যক্তি এবার আর চুপ করিয়া রহিল না। সে তাহাকে বেশ উত্তম-মধ্যম দিয়া দিল। তখন ধানচোর হাত তুলিয়া চীৎকার করিতে লাগিল,-“দেখ ভাই, আমাকে মারিতেছে, দেখ ভাই আমাকে মারিতেছে, কি অন্যায় ! কি অন্যায়৷ ” এইরূপে পৃথিবীতে চুক্তি-নিখ্যা কথা ও শান্তির প্রাদুর্ভাব হইল । তখন সকলে মিলিয়া পরামর্শ করিতে লাগিল। :- আইস, আমরা একজন বলবান, বুদ্ধিমান, সকলের মন যোগাইয়া চলে,-এমন লোককে আমাদের ক্ষেত রাখিবার জন্য নিযুক্ত করি । তাহাকে আমরা সকলে ফসলের অংশ দিব । সে অপরাধের দণ্ড দিবে, ভাল লোককে রক্ষা করিবে, আর আমাদের ভাগমত ফসল দেওয়াই দিবে। তাহার একজন লোক বাছিয়া লইল । তাহাকে তাহারা ফসলের ছয় ভাগের, এক ভাগ দিতে রাজী হুইল । সকলের সম্মতিক্রমে সে রাজা হইল, এই জন্য তাহার নাম হইল মহাসম্মত । এইরূপে তেজোময় জীব অনন্ত আকাশে ঘুরিয়া বেড়াইতে বেড়াইতে ক্ৰমে লোভে পড়িয়া মাটীতে মাটী হইয়া গেল । শেষে তাহদের ক্ষেত আগলাইবার জন্য একজন ক্ষেতাওয়ালার দরকার হইল । O সেই ক্ষেতাওয়ালাই রাজা, ফসলের ছয় ভাগের এক ভাগ তাহার भछिन । মহাবস্তু অবদানে বুদ্ধদেবের জন্মকথা উপলক্ষে এই বৃত্তান্তটি দেওয়া হইয়াছে। এই মহাসম্মতের অনেক পুরুষ পরে ইক্ষাকু, ইক্ষাকুর অনেক পুরুষ পরে শুদ্ধোদন, ওদ্ধোদনের পুত্র বুদ্ধদেব । সুতরাং মহাবস্তুর বর্ণনাটি প্ৰাচীন বলিয়াই বোধ হয় । ୪ ଜଳ