পাতা:বৌদ্ধধর্ম - হরপ্রসাদ শাস্ত্রী.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Cोक्ष । SS ফল পাওয়া যাইবে । প্ৰজ্ঞাপারমিত পড়িতে অনেক বৎসর লাগে, বুঝিতে আরও বেশী দিন লাগে এবং প্রজ্ঞাপারমিতার ক্রিয়াকৰ্ম্ম হৃদয়ঙ্গম করিতে আরও বেশী দিন লাগে। এত ত তুমি পরিবে না বাপু, তুমি * এই মন্ত্ৰটী জপ কর, তাহা হইলে সব ফল পাইবে।” যখন বৌদ্ধধর্মের এই মত দাড়াইল, তখন গুরুশিয্যের সম্পর্কটা খুব আঁটা আঁটি হইয়া গেল । তখন তিনটী কথা উঠিল -“গুরুপ্ৰসাদ’, ‘শিষ্যপ্ৰসাদ’, ‘মন্ত্রপ্রসাদ', অর্থাৎ গুরুকে ভক্তি’করিতে হইবে, শিষ্যকে স্নেহ করিতে হইবে, এবং মন্ত্রের প্রতি আস্থা থাকিবে। যে সময় বৌদ্ধধর্মের মধ্যে মন্ত্রযান প্ৰবেশ করে, সে সময় ব্ৰাহ্মণ্য ধৰ্ম্মাবলম্বীদের মধ্যে গুরুশিয্যের কিরূপ সম্বন্ধ ছিল জানা যায় না । ব্ৰাহ্মণদের মধ্যে আচাৰ্য্য ও শিষ্যের সম্পর্ক পিতাপুত্রের সম্পর্কের মত । বাস্তবিকও যিনি " শিক্ষা দিবেন, তিনি পিতার কাৰ্য্যই করিবেন। সন্তানের শিক্ষার ভার ত পিতারই, তবে তিনি যদি না পারেন, তবে একজন প্ৰতিনিধিরা হন্তে সন্তানকে সমৰ্পণ করিয়া দিবেন। শিক্ষক বা আচাৰ্য্য পিতার প্রতিনিধিমাত্ৰ। আচাৰ্য্যের মৃত্যুতে শিষ্যের ত্রিরাত্র অশৌচ গ্ৰহণ করিতে হইত। এখনও যিনি গায়ত্রী উপদেশ দেন, সেই আচাৰ্য্য গুরু মরিলে, ব্ৰাহ্মণকে ত্রিরাত্র অশৌচ গ্ৰহণ করিতে হয়। কিন্তু শিষ্য গুরুর দাস, তঁহার যথাসৰ্ব্বস্ব গুরুর, এই যে একটা উৎকট মত ভারতীয় ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের মধ্যে চলিতেছে, এ মতের মূলই মন্ত্রযান। মন্ত্রযানের গুরু ও শিষ্যের মধ্যে আর সেরূপ সমান ভাবটি রহিল না, একজন বড় ও একজন ছোট হইয়া গেল । বজ্ৰযানে গুরু আবুও বড় হইয়া উঠিলেন। তিনি স্বয়ং বজধারী। এই যানের প্রধান কথা এই যে, দেবতাদিগের এবং বুদ্ধ ও বোধিসত্ত্ববজ্ৰযানের ' দিগের বজধর নামে একজন পুরোহিত হইলেন । পঞ্চধ্যানিবুদ্ধের উপর বর্জসত্ত্ব নামে আর একজন বুদ্ধ হইলেন। তঁহাকে উহারা বুদ্ধগণের পুরোহিত বলিয়া মানিয়া থাকে। বৰ্জসত্ত্ব কতকটা আদিবুদ্ধ বা ঈশ্বরের স্থান অধিকার করিয়া বসিলেন । এই মতের গুরুদিগকে বজাচাৰ্য্য বলিত ।