পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯৮ বৌদ্ধ-ভারত বিশেষত্ব। মানবজীবনের সখদঃখময় বিচিত্র ঘটনার মধ্যে আনন্দময় দেবতার যে অনন্তলীলা হইয়া থাকে, কবি তাহা কাব্যে, শিল্পী তাহা শিল্পে ব্যক্ত করিয়া থাকেন। কবির ছন্দোময়ী বাণী যেমন শ্রোতার হৃদয় ভাবরসে পণ করিয়া দেয়, শিল্পীর রেখা ও বর্ণময় চিত্ৰও তেমন দশকের চিত্ত পন্দিত করিয়া থাকে। মহাকবির রচনার ন্যায় শ্রেষ্ঠ শিল্পীর শিল্প আমাদের আত্মা সংস্কৃত ও অলঙ্কৃত করে, কেবল তাহা নহে ইহার প্রভাবে আত্মা ছন্দোময় হইয়া থাকে। এই শিলপ সীমার মন্দিরে অসীমের আনন্দ ধবনিত করিয়া তোলে। এই আধ্যাত্মিকতাই ভারতীয় কলাবিদ্যার বিশিষ্টতা। বঙ্গের ঋষিকল্প সন্ধী শ্ৰীযুক্ত অরবিন্দ ঘোষ মহাশয় এই প্রসঙ্গে লিখিয়াছেন,— “ইহসর্বস্ব যে চার্যকলা তাহা ছাড়িয়া আমরা চাহিতেছি সেই কলা যাহা ভগবানের সহিত আমাদিগকে পরিচিত করাইয়া দেয় । মানুষের অধোমুখী প্রবত্তি সমহের মত্তি যে কলা ফন্টাইয়া তুলে তাহা হইতে চক্ষ ফিরাইয়া দেখিতে চাহিতেছি উচচতর, মহত্তর, শুদ্ধতর প্রেরণার চিত্র। চার্যকলার উদ্দেশ্য রস সটি। ভগবৎ উপলব্ধিতে এক রস, বিষয় সম্ভোগে আর এক রস । শিল্পী এই দই বিষয়ের ষে কোনটি লইয়া রসপণ সম্মিট করিতে পারেন। কিন্ত শ্রেষ্ঠরস, রসের পণতা যদি কিছু দেখাইতে চাহেন তাহা হইলে শিল্পী যেন ভগবানকেই বাক্যে, শব্দে, চিত্রপটে, প্রস্তরফলকে ফটাইয়া তুলেন। আর্টের মলকথা হইতেছে চিরন্তন অনন্ত সত্য। এই সত্য হইতেছে বহৎ—সব্বত্র বিস্তৃত। চক্ষর কাছে যাহা সন্দর বা অসন্দের, সংস্কারের কাছে যাহা প্রিয় বা অপ্রিয়, বৃদ্ধির কাছে যাহা ভাল বা মন্দ সেই সকলের মধ্যেই এক নিগঢ় সত্য রহিয়াছে। এই সত্যই নিত্য, ইহাই রসপণ", এই জিনিষটাই শিল্পী দেখাইতে চাহেন। কর্ণার অবতার ভগবান তথাগতকে শিল্পী আকিয়া দেখাইতে পারেন। তাই বলিয়া রন্দ্র-আত্মা নাদিরসাহের প্রতিমাত্তিকে শিল্পজগৎ হইতে নিৰ্বাসিত করিতে হইবে কেন ?