ՏՕԵ` বৌদ্ধ-ভার করিয়াছেন যে, ইহা খাষ্টীয় ৪র্থ কি ৫ম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। এই স্তম্ভ দশনে ইয়রোপীয়দিগকে ইহা স্বীকার করিতে হইয়াছে যে, প্রাচীন ভারতের শিল্পীরা যত বহৎ, যেমন মসণ লৌহদণ্ড প্রস্তুত করিতে জানিতেন উহার বহু শতাব্দী পরেও ইয়রোপীয়েরা এরপে লৌহস্তম্ভ নিম্নমাণ করিতে জানিতেন না। আরও আশ্চয্যের বিষয় এই যে, চৌদ্দশত বৎসরের পরেও আজ পর্য্যন্ত এই স্তম্ভে মরিচা পড়ে নাই, উৎকীর্ণ অক্ষরগুলি সপেস্ট দন্ট হইয়া থাকে। সেকালের ভারতীয় শিল্পী কি প্রকারে এমন গণবিশিষ্ট লৌহস্তম্ভ নিমণি করিয়াছিলেন তাহা এই বিংশ শতাব্দীর সভ্যতাভিমানী বৈজ্ঞানিকদের নিকট এখনও রহস্যাবত হইয়া রহিয়াছে। আব, পাহাড় ও ধর নামক স্থানে প্রাপ্ত লৌহস্তম্ভও বিসময়ের সামগ্রী। কেবল সৌন্দৰ্য্য বিকাশে নহে, ধমের সহিত শিল্পের সংমিশ্রণে বৌদ্ধশিল্প বিশেষ গৌরব লাভ করিতেছে। ভগবান বুদ্ধের ধ্যানসন্দর মুখমন্ডলের শাস্তোজল শোভা, তাঁহার জন্ম, তাঁহার প্রব্রাজ্যা, তাঁহার মার বিজয়, তাঁহার ধৰ্ম্মচক্ল প্রবত্তন, তাঁহার পরিনিব্বাণলাভ, তাঁহার পাব পৰব জন্মের মহত্তম কাহিনী সমস্তই শিল্পীরা শ্রদ্ধাপবেক রেখাক্ষরে অঙ্কিত করিয়া রাখিয়াছেন। কেবল তাহা নহে সে কালের জনমণ্ডলী যে সকল ঘটনা সাগ্রহে সমরণ করিয়া রাখিয়াছিল, যে সকল ঘটনা লোক পরম্পরায় শতাব্দীর পর শতাব্দী রক্ষা পাইয়াছিল এমন বহু ঐতিহাসিক তথ্য শিল্পীরা চিত্রে ও ভাস্কয্যে প্রকাশ করিয়াছেন। ধরিত্রীর জঠর হইতে যে সকল বৌদ্ধকাঁত্তর ধংসাবশেষ আবিস্কৃত হইতেছে তন্মধ্যে সেকালের ধাম, সমাজ ও রাষ্ট্রনীতি সম্বন্ধে বহল বিবরণ জানা যাইতেছে। চিত্রে ও ভাস্কয্যে মহামতি অশোক সম্বন্ধে কত আখ্যান, বিজয়সিংহের লঙ্কাদ্বীপে অবতরণ, লঙ্কার আদিম অধিবাসীদের সহিত বিজয়সিংহের যুদ্ধ, তাহার অভিষেক প্রভৃতি আখ্যান অঙ্কিত রহিয়াছে।
পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/১১৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।