পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বৌদ্ধ-ভারত

কাহিনী বিবৃত করিয়াছেন। লোকের প্রতি অননুকম্পা করিয়া, বহুজনের হিতকামনায় তিনি তাঁহার উপলব্ধ সত্য সোজা কথায় সর্ব্বজন সমক্ষে ব্যাখ্যা করিয়াছেন। তাঁহার উপদেশ লোক সাধারণকে চক্ষুষ্মান, করিল, অমৃত দুন্দুভি শ্রবণ করাইল। যাহা কোনকালে শুনে নাই লোক সাধারণ এমন মধুর ধর্ম্মবাণী শনিয়া নূতন প্রাণ লাভ করিল। তাঁহার সেই সত্যবাণী মন্ত্র হইয়াছে, তাঁহার সেই কাহিনীই উত্তরকালে শাস্ত্র হইয়াছে।

 প্রাচীন শাস্ত্রকার গৌতম বুদ্ধের জন্য যত ক্ষুদ্র আসনটিই রাখুন না কেন, পৃথিবীর ইতিহাসের ক্ষেত্রে তিনি এমন বৃহৎ স্থান জুড়িয়া রহিয়াছেন যে, সমস্ত পৃথিবী তাঁহাকে প্রীতিপূর্ব্বক আপনার বলিয়া চিনিয়া জানিয়া লইয়াছে। পুরাণে তিনি অবতার বলিয়া উক্ত হইয়াছেন। এমন অবতার হইয়া তাঁহার গৌরব একটুও বাড়িয়াছে বলিয়া বোধ হয় না। অবতার বলিয়া অনেকেই তাঁহাকে অন্তরে স্থান দিতে কুণ্ঠা বোধ করিয়া থাকেন। কিন্তু, মহাপুরুষ বলিয়া সকলেই তাঁহাকে হৃদয় আসনে বসাইয়া ভক্তিপূর্ণ অর্ঘ্যদান করিবেন।

 বুদ্ধকে ঘরের কোণে ছোট একটি আসন দিয়া হিন্দুরা তাঁহার ধর্ম্ম ও শাস্ত্র এই দেশ হইতে এমন নিঃশেষে বিলুপ্ত করিয়া দিয়াছিলেন যে, এই ধর্ম্ম একরূপ এদেশ হইতে অন্তর্হিত হইয়াছিল।

 কিন্তু, সজীব পাদপ যে দিকে আলোক পায় সেই দিকেই ঝুঁকিয়া পড়ে। জন্মভূমিতে ঠাঁই না পাইয়া এই ধর্ম্ম বিদেশকেই আশ্রয় করিল এবং তথায় বলিষ্ঠ, স্বাধীন, প্রাণবান নরনারীর শ্রদ্ধার আলোকে অপূর্ব্ব বিকাশ লাভ করিল। বুদ্ধের ধর্ম্ম যদি অগভীর হইত, তাঁহার সাধনাতর, যদি ভারতবর্ষের মর্ম্মস্থানে শিকড় প্রবেশ করাইতে না পারিত, তাহা হইলে যখন এদেশ বিদ্রোহী হইয়া এই তরুর শাখা পল্লব কাটিয়া ফেলিয়াছিল, তখন মূলটিও উপাড়িয়া ফেলিত সন্দেহ নাই। এই অসাধ্য সাধনের চেষ্টা হয় নাই এমন নহে কিন্তু, মন্দির ভাঙ্গিয়া শাস্ত্র পোড়াইয়া ত এই