করিয়া সোনা রূপার কাঠি ফিরাইয়া বৌদ্ধধর্ম্ম, বৌদ্ধবিহার এবং বৌদ্ধশাস্ত্র অল্পকাল মধ্যে সমস্তই প্রাণহীন করিয়া দিল। গভীর অন্ধকারে সমস্তই ঢাকা পড়িয়া গেল।
পতন দশায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার সহিত আঁটিয়া উঠিতে না পারিয়া বৌদ্ধধর্ম্মের পৈতৃক ভিটায় স্থান হইল না। স্বগৃহের পরিত্যক্ত অনাদৃত যুবকের ন্যায় বৌদ্ধধর্ম্মকে বিদেশেই ঘর বাঁধিতে হইয়াছে। সেইখানে এই ধর্ম্ম সবিক্রমে সগৌরবে আপন মহিমায় অচলপ্রতিষ্ঠ হইয়া রহিয়াছে। কিন্তু, ভারতবর্ষ এই ধর্ম্মের গৌরব বিস্মৃত হইল।
যাঁহারা এই মৈত্রীমূলক সদ্ধর্ম্মের বর্ত্তমান অভ্যুত্থানের সংবাদ রাখেন তাঁহারা জানেন যে, ধৈর্য্যশীল প্রতীচ্য পণ্ডিতগণ ভারতবর্ষের ভিতর হইতে এই ধর্ম্মের কোনো গ্রন্থ উদ্ধার করিতে পারেন নাই; ভারতপ্রান্তবর্ত্তী নেপাল এবং ভারতের বাহিরে তিব্বত, সিংহল, ব্রহ্মদেশ, চীন ও জাপান হইতে বৌদ্ধশাস্ত্র সংগৃহীত হইয়াছে। নেপাল, তিব্বত, চীন ও জাপানে মহাযান বৌদ্ধধর্ম্ম এবং সিংহল ও ব্রহ্মদেশে হীনযান বৌদ্ধধর্ম্ম প্রচলিত। একই ধর্ম্ম, একই শাস্ত্র দুই সম্প্রদায়ে দুইরূপে অভিব্যক্ত হইয়াছে। হীনযান ধর্ম্মগ্রন্থে বৌদ্ধধর্ম্মের আদিম অবিকৃত চেহারাটি দেখা যাইতে পারে। এই ধর্ম্মশাস্ত্র “ত্রিপিটক” নামে খ্যাত। আমরা সিংহল হইতে এই “ত্রিপিটক” পাইয়াছি। বর্ত্তমানে সিংহলে যে ত্রিপিটক প্রচলিত আছে তাহার পাঠ তৃতীয় বৌদ্ধ মহাসঙ্গীতির নির্দ্ধারিত পাঠের সহিত অভিন্ন হইবে বলিয়া মনে হয়। কারণ যখন অশোকপুত্র মহেন্দ্র একদল বৌদ্ধ সাধুসহ পিতার আদেশে সিংহলে ধর্ম্ম প্রচারার্থে গিয়াছিলেন, সেই সময়ে সিংহল রাজ তিস্স বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করিয়া সিংহলে এই ধর্ম্ম স্থাপন করেন। যে সকল বৌদ্ধসাধু মহেন্দ্রের অনুগমন করিয়াছিলেন তাঁহারা কেহ কেহ হয়ত তৃতীয় বৌদ্ধ মহাসঙ্গীতিতে যোগদান করিয়া থাকিবেন। ইহার দেড়শত বৎসর পরেই পালি পিটক-