পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বৌদ্ধ-ভারত

হইয়াছে। ললিত বিস্তরে বুদ্ধের সাধনার ইতিবৃত্ত যেমন সুপরিস্ফুট হইয়াছে, তেমন সুস্পষ্ট বর্ণনা অন্যত্র দেখা যায় না।

 মহাযান সম্প্রদায় আদিম বুদ্ধবাণীকে মূলধন করিয়া নানাদিক দিয়া খাটাইয়া, বাড়াইয়া প্রাণেরই পরিচয় দিতেছেন। ইহাতে হয় তো স্থানে স্থানে লোকসান হইয়া থাকিবে, কিন্তু, সে ক্ষতি এড়াইবার উপায় নাই। কারণ ঘরের পুঁজি লইয়া ব্যবসায়ে নামিলে লাভ লোকসানের ঝুঁকি থাকিবেই। সুতরাং মহাযানদের শাস্ত্রে অতিরঞ্জন দেখিয়া বিস্মিত হইলে চলিবে না। তাহাদিগের সমাজে, সাধনায় ও শাস্ত্রে মৃত্যুর দুর্ল্লক্ষণ নাই, নানাদিকে জীবনের আবেগই দৃষ্ট হইয়া থাকে; প্রাণের আনন্দলীলা নিরন্তর হিল্লোলিত হইতেছে। বৌদ্ধধর্ম্মের ব্যাপ্তি ও পরিণতির ইতিবৃত্ত অতীব কৌতূহলাবহ।

 কেবল মাত্র ধর্ম্মসাধনার দিক হইতে নহে, ঐতিহাসিকতার দিক হইতেও বৌদ্ধশাস্ত্রের আলোচনার প্রয়োজনীয়তা রহিয়াছে। এই শাস্ত্রের মধ্যে প্রাচীন ভারতের সভ্যতার উজ্জ্বল চিত্র দৃষ্ট হয়। সেই প্রাচীনকালে ভারতবর্ষের বাহ্য আকার, রাষ্ট্রীয় বিভাগ, সামাজিক ও আর্থিক অবস্থা কিরূপ ছিল বৌদ্ধশাস্ত্রে নানাস্থানে তাহার সুস্পষ্ট বর্ণনা রহিয়াছে। বৌদ্ধশাস্ত্রের আকর হইতে প্রতিদিন পণ্ডিতেরা নিত্য নূতন রত্ন আহরণ করিতেছেন।

 বৌদ্ধশাস্ত্র বা ত্রিপিটক মোটামটি তিনভাগে বিভক্ত। বিনয়, সূত্র, অভিধর্ম্ম। বিনয় পিটকে সঙ্ঘের ইতিবৃত্ত বিস্তারিত আলোচিত হইয়াছে। বিনয়ের পাঁচ ভাগ আছে; পারাজিক, পাচিত্তীয়, মহাবগ্‌গ, চুল্লবগ্‌গ, পরিবার।

 বৌদ্ধসঙ্ঘ প্রাচীন ভারতের সর্ব্বপেক্ষা শক্তিশালী জনসঙ্ঘ। বিনয়পিটকে এই সঙ্ঘের অভ্যুত্থান ও নানা পরিবর্ত্তনের ধারাবাহিক ইতিবৃত্ত পাওয়া যায়। পাতিমোক্‌খ সুত্তবিভঙ্গের অন্তর্গত। এই গ্রন্থখানিকে প্রাচীনতম বৌদ্ধগ্রন্থ বলা হয়। পাতিমোক্‌খ গ্রন্থে প্রায়শ্চিত্তের বিধানগুলি সূত্রাকারে গ্রথিত