আছে। সূত্রবিভঙ্গে নানা অপরাধ ও তাহার প্রায়শ্চিত্ত বিধান বিস্তারিত আলোচিত হইয়াছে।
প্রত্যেক পূর্ণিমা ও অমাবস্যা তিথিতে বৌদ্ধদের সম্মিলনীতে সূত্রবিভঙ্গ পঠিত হইত। বৌদ্ধ সাধুদের এই পাক্ষিক সভাগুলির একটি বিশেষত্ব এই ছিল যে, সমবেত ভিক্ষুসঙ্ঘের সম্মুখে ভিক্ষু ও ভিক্ষুণীগণ তাঁহাদের কৃত ক্ষুদ্র বৃহৎ পাপগুলি অকপটে স্বীকার করিতেন এবং পাপগুলির নিমিত্ত কোনো-না-কোনো প্রায়শ্চিত্ত গ্রহণ করিতেন। এই সভার প্রয়োজনের নিমিত্ত পাতিমোক্খের প্রায়শ্চিত্তবিধি সূত্রাকারে বিরচিত হইয়াছিল। গৌতম বুদ্ধ স্বয়ং এই সূত্রগুলির আবৃত্তি করিয়াছেন বলিয়া উল্লেখ দেখা যায়। কিন্তু, এই উক্তির সমর্থনের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় না। পালি বৌদ্ধশাস্ত্র এক মাত্র ভাবে নহে, ভাষায়ও ভগবান্ বুদ্ধের বলিয়া স্বীকৃত হইতে পারে। কারণ ভগবান্ বুদ্ধ সাধনায় সিদ্ধিলাভ করিয়া যখন তাঁহার সুচিন্তিত ধর্ম্মমত জনসমাজে প্রচারের জন্য বাহির হইলেন তখন তাঁহার বয়স পঁয়ত্রিশ বৎসর মাত্র। তাঁহার পরে তিনি পঁয়তাল্লিশ বৎসরেরও বেশী কাল জীবিত ছিলেন। এই দীর্ঘকালে তাঁহার মুখের বাণী শিষ্যগণ যথাযথ কণ্ঠস্থ করিয়া থাকিবেন হইাতে সন্দেহ করিবার হেতু নাই। এইজন্যই সূত্রপিটকে কোথায়ও ছাঁটা-কাটা ধর্ম্মমত লিপিবদ্ধ হয় নাই। কোন সময়ে, কোথায়, কি কারণে, কাহার নিকট বুদ্ধ তাঁহার ধর্ম্মবাণী ব্যাখ্যা করিয়াছেন প্রত্যেক সূত্রেরই ভূমিকাভাগে তাহার উল্লেখ দেখা যায়। সূত্রপিটকের প্রায় সকল সূত্রেরই বক্তা স্বয়ং ভগবান্ বুদ্ধ। কদাচিৎ তাঁহার প্রধান শিষ্যদের দুই এক জনের নাম দেখা যায়।
বৌদ্ধধর্ম্মশাস্ত্রের এই ঐতিহাসিক যাথাতথ্য সকল দেশের সূধীবর্গকে এই শাস্ত্রালোচনায় আকর্ষণ করিতেছে, সেই আলোচনার ফলে ভারতের সভ্যতা ও ভারতের মহাপুরুষ বুদ্ধ